লন্ডনে ‘সেজদা’ দিয়ে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, লন্ডনে সেজদা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। অথচ তার জনগণের কাছে সেজদা দেওয়ার কথা ছিল। এখনো সময় আছে কিবলা পরিবর্তন করে জনগণের কাছে যাওয়ার। দেশে সংকট নিরসনের একমাত্র সমাধান গণপরিষদ নির্বাচন।

শনিবার রাজধানীর বাংলামটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণপরিষদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, নেপাল, তুরস্ক ও তিউনিসিয়ায় গণপরিষদ নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশেও সেই নির্বাচন প্রয়োজন। যারা ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বলতেন, এখন ফেব্রুয়ারির কথা বলছেন, তারা সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের গুরুত্ব বোঝেন না। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ১৯৭৮ সালের ১৭ এপ্রিল জিয়াউর রহমানও দ্বিতীয় ফরমানের মাধ্যমে গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলেছিলেন। বিএনপির ৬০ শতাংশ সমর্থনের দাবিকে তিনি ‘আস্ফালন’ বলে অভিহিত করেন।

তিনি অভিযোগ করেন, ঐকমত্য কমিশনও লন্ডন ও গুলশানে ‘সেজদা’ দিচ্ছে। এক মাস সময় বাড়ানো গ্রহণযোগ্য নয়, দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। শহীদ পরিবারের সদস্যদের পরিবর্তে কিছু রাজনৈতিক নেতাকে পাশে বসিয়ে ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছে, যা ভুল ছিল। সেনাবাহিনী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অস্ত্র হাতে থাকলেও তারা এর ব্যবহার জানে না। সংবিধান সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। শুধু বিদেশ ভ্রমণ করেই নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়।”

দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পেলে আমি জনসমক্ষে আসব না। প্রয়োজনে চা দোকান চালিয়ে জীবন কাটাব।”

আলোচনা সভায় দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এনসিপিকে আসন দিয়ে কেনা যাবে না। জনগণই নির্বাচনে মূল ভূমিকা পালন করবে। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের কারণগুলো বহাল রেখে যদি সরকার গঠন হয়, তবে কঠোর গণপ্রতিরোধ গড়ে উঠবে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ১৯৭২ সালের সংবিধান দিয়ে সব অপরাধের বৈধতা দিয়েছে। তার মতে, নির্বাচনের সময়সূচি বড় বিষয় নয়; তবে ‘রুলস অব দ্য গেম’ বাতিল করে গণপরিষদ নির্বাচন করতেই হবে।

এক বিবৃতিতে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও মিডিয়া সেল সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন বলেন, বিএনপির সঙ্গে ৩০ আসনের সমঝোতার খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও প্রোপাগান্ডার অংশ। তিনি বলেন, “এনসিপি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি। আমাদের সুস্পষ্ট অবস্থান হলো— গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং নতুন সংবিধান প্রণয়ন ছাড়া গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি সম্ভব নয়। ভাগবাটোয়ারার সমঝোতা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।”

আরো পড়ুন