জয় বাংলা বলেই আমি আমার জীবন দিতে চাই: কাদের সিদ্দিকী

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম বলেছেন, সরকার বাহাদুররা বলে গেলাম, জয় বাংলা বলা যদি অপরাধ হয় তাহলে আমাকে প্রথম গ্রেফতার করুন। আমি যেখানে যাইয়া দাঁড়াবো- বলবো, আমি জয় বাংলা বলে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। জয় বাংলা বলেই আমি আমার জীবন দিতে চাই।

এসময় তিনি আরো বলেন, আমার নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ আমার ধ্যান, বঙ্গবন্ধু আমার চেতনা, বঙ্গবন্ধু আমার চৈতন্য, এখান থেকে কেউ সরাতে পারবে না। আর শেখ হাসিনার যখন পতন হয় তখন মানুষের মনে এক নম্বরে ছিল ধানের শীষ। আর এখন হয়ে গেছে পেটের বিষ। ১৫-১৬ বছরে শেখ হাসিনা যে অত্যাচার করেছে, যা জোর জুলুম করেছে, ব্যাটারি গাড়ির স্ট্যান্ড,সিএনজি স্ট্যান্ড ও অন্যান্য জায়গা থেকে যে চান্দা উঠাইছে নৌকা মার্কারা, এই ১২-১৪ মাসে অন্য দলেরা তার ১০ গুণ করেছে। যে কারণে মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে শেখ হাসিনাকে সরিয়েছে ঠিক একই কাজ করলে বিএনপিকেও মানুষের ভুলে যেতে কষ্ট হবে না।

আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার বহেড়াতৈল গণ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত ২নং বহেড়াতৈল ইউনিয়ন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের দ্বি বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন- জামায়াত সব সময়ই উল্টা পথে চলে। যখন ব্রিটিশ এর কাছ থেকে ভারতের স্বাধীনতা এলো আমরা যখন পাকিস্তান চাইলাম সে সময় জামাত পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্রিটিশদের পক্ষে ছিল। আমরা যখন লাখ লাখ মানুষ জীবন দিলাম, মা-বোন তার সম্মান হারালো, ঘরবাড়ি পুড়লো তখন এই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জামাতে ইসলাম দাঁড়াই গেল।

জামায়াতে ইসলামী যদি একা নির্বাচন করে পাঁচটি সীটও পায় তবে আমার রাজনীতি শেখা হয় নাই। জামায়াতে ইসলামী খুব লাফালাফি করতেছে। অনেক টাকা পয়সা আছে তাদের। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে যে অন্যায় করেছে, মানুষের কাছে সত্যিকার অর্থে মাফ না চাইলে কোনদিন জামায়াত বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় যেতে পারবে না। যেভাবে মাফ চায় ওইভাবে কাজ হবে না। যেভাবে আল্লাহর কাছে কাঁদলে ও মাফ চাইলে আল্লাহ কবুল করেন, মানুষের কাছেও ওইভাবে মাফ চাইতে হবে। দেশের মানুষ মাফ না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মাফ করার ক্ষমতা নাই।

কাদের সিদ্দিকী বলেন- শেখ হাসিনাকে তার আবার ক্ষমতা এই আট দশটা বাচ্চা ছেলের ছিলনা। বিএনপি পারে নাই, জামাত পারে নাই। কিন্তু শেখ হাসিনার পতন হয়েছিল। আমি বিশ্বাস করি তা আল্লাহর তরফ থেকে হয়েছিল। তিনি যে পরিমাণ অত্যাচার করেছেন, মানুষকে যে পরিমাণ অত্যাচার করেছেন তার জন্য আল্লাহর তরফ থেকে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী আরো বলেন, “ড. ইউনুসের গ্রামীণ ব্যাংকই শুধু নয়, ‘গ্রামীণ’ নামে কিছুই থাকবে না। তখন ১৪ কলস পানি খেলেও কাজ হবে না। শেখ হাসিনা যখন তাকে সুদখোর বলেছিলেন, তখন তার পাশে ছিলাম আমি।”

অনুষ্ঠানে বহেড়াতৈল ইউনিয়ন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন টাঙ্গাইল জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবু সালেক হিটলু, সখীপুর উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস ছবুর খান, সাধারণ সম্পাদক মো. ছানোয়ার হোসেন সজীব, বাসাইল উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি রাহাত হাসান টিপু, কালিহাতী উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি ইথার সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিক জাহাঙ্গীর, দেলোয়ার হোসেন মাস্টার, বাদল মিয়া সাংগঠনিক সম্পাদক তুহিন সিদ্দিকী, পৌর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি আবু জাহিদ রিপন ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা জামানসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ এসময় বক্তব্য রাখেন।

আরো পড়ুন