সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর

কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে এ হামলা সংঘটিত হয়। হামলার সময় বাড়িতে আবদুল হামিদের পরিবারের কেউ অবস্থান করছিলেন না।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড রায়ের পর জেলার মিঠামইন উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করে একটি আনন্দ মিছিল বের করেন। রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মিঠামইন বাজার এলাকায় এ আনন্দ মিছিল চলে, যাতে প্রায় শতাধিক লোক অংশ নেন।
এ আনন্দ মিছিলের নেতৃত্ব দেন মিঠামইন উপজেলা বিএনপির সদস্য আলমগীর শিকদার, যিনি উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই। আনন্দ মিছিলটি মিঠামইন বাজার প্রদক্ষিণ শেষে হঠাৎ দিক পরিবর্তন করে মিঠামইন উপজেলা-সংলগ্ন কামালপুর গ্রামে অবস্থিত সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বাড়িতে পৌঁছায়। এ সময় মিছিল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ৩০–৪০ জন ব্যক্তি বাড়ির প্রধান দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা ঘরের আসবাবপত্র, জানালা, দরজা, আলমারি ও বাইরের বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাড়িতে কেউ না থাকায় বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো গেছে। তবে হঠাৎ ভাঙচুরের ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়—মিঠামইন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীরের নির্দেশে এবং তার ছোট ভাই আলমগীর শিকদারের নেতৃত্বে এ হামলা সংঘটিত হয়েছে।
ঘটনার পরপরই স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক শাখা জানিয়েছে যে, পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে ঘটনাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং হামলাকারীদের শনাক্তে প্রমাণ সংগ্রহ চলছে। এ ঘটনার জেরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা এ হামলাকে “পরিকল্পিত রাজনৈতিক নাশকতা” এবং “রাজনৈতিক বিদ্বেষের প্রকাশ” বলে মন্তব্য করেছেন এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
মিঠামইন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবির শফিউল জানান, “বিএনপির একটি আনন্দ মিছিল করার সময় কিছু সংখ্যক লোক বাড়িতে প্রবেশ করে সাবেক রাষ্ট্রপতির বসার ঘরে ভাঙচুর করেছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। বিষয়টি আমাদের নজরদারিতে আছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
