সড়ক দুর্ঘটনায় কুমিল্লার একই পরিবারের চারজন নিহত
ডেস্ক রিপোর্টঃ কাতারে থাকতেন মো. ইলিয়াস। চার মাসের জন্য দেশে এসেছিলেন তিনি। গতকাল কাতার ফেরার ফ্লাইট ছিল তাঁর। কিন্তু অসুস্থতার কারণে কাতারে নিজ কর্মস্থলে ফেরা হয়নি তাঁর। কাতার ফিরতে না পারায় ঢাকা থেকে নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাড়িতে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।
কাতার ফিরে যাবেন, এ কারণে ভাইবোন, ছেলে ও স্বজনদের নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। কিন্তু এ দুর্ঘটনায় তাঁর সঙ্গে দুই ভাইবোন ও আট বছরের ছেলে নিহত হয়েছেন।
দাঁড়িয়ে থাকা লরির পেছনে একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার টিপুরদী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তিনজন ও হাসপাতালে আনার পর ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে আছেন একই পরিবারের চারজন। তাঁরা হলেন কাতারপ্রবাসী মো. ইলিয়াস (৩৮), তাঁর বড় ভাই মফিজ (৪৭), বোন মিনুয়ারা (৫০) ও ইলিয়াসের ছেলে ইনান (৮)।
নিহত ইলিয়াসের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনার ১৩ নম্বর ইউনিয়নের ভেরেরা গ্রামে। ওই এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. দিদারুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ইলিয়াসরা পাঁচ ভাই ও তিন বোন। তাঁদের পিতা মৃত লতিফ মিয়া। গতকালের ফ্লাইট ধরতে গত পরশু দিন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। কিন্তু চিকেন পক্সে আক্রান্ত হওয়ায় যেতে পারেননি তিনি। আজ বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা।
এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ইলিয়াসের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর (২৮) ও ভাতিজা রাজু (২০)।
দুর্ঘটনায় নিহত আরও দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁদের একজন হলেন শুভ সাহা (১৮)। শুভর বাবার নাম গোপাল সাহা। চাঁদপুরের হাজিগঞ্জে তাঁর বাড়ি। সড়ক দুর্ঘটনায় শুভর মা কাজল রানি সাহা আহত হয়েছেন। বোনের বাসা থেকে বেড়ানো শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় পড়েন তাঁরা।
অন্যদিকে নিহত হেনা আক্তারের (১৫) বাড়ি কাজলার তাড়াইলে। তার বড় ভাই নূরে আলম জানান, চাঁদপুরে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। তিন মাস আগে বিয়ে হয়েছিল হেনার।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসিরুদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনায় আহত ১৩ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আরও দুজনকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাইয়ুম প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, দুপুরে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সিডিএম পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরির পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটি দুমড়েমুচড়ে পাশের খাদে অর্ধেক পড়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। পরে হাসপাতালে মারা যান আরও ছয়জন। আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সূত্রঃ প্রথম আলো