কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড মডেল কলেজের অধ্যক্ষের ফেইক আইডি দিয়ে প্রতারণা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড কর্মকর্তাদের পর এবার কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড সরকারি মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ড. এ কে এম এমদাদুল হক এর নামে ফেইক ফেইসবুক আইডি ব্যবহার করে অর্থের বিনিময়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফল পরিবর্তন করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণামূলক পোষ্ট দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুমিল্লা সদর দক্ষিন মডেল থানায় সাধারন ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে। এছাড়া প্রতারণার এ বিষয়টি র্যাব-১১ কুমিল্লাকে অবহিত করা হয়েছে।
জানা যায়, সম্প্রতি কুমিল্লা বোর্ডের পদস্থ কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বোর্ডের অধীন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) প্রধানদের নিকট নানা অজুহাতে কৌশলগত ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রতারণামূলক কর্মকান্ড চালায় একটি চক্র। কয়েকটি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে চক্রটি কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, কর্মকর্তা, সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট, প্রোগ্রামার এর মিথ্যা পরিচয় দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা-২০১৮ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা সমাধান ও ফল পরিবর্তন করে দেওয়ার কথা বলে মোবাইল বিকাশ নম্বর ও বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ দাবি করে প্রতারণামূলক কর্মকান্ড চালায়। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত সোমবার বিকালে কোতয়ালী মডেল থানায় বোর্ডের পক্ষ থেকে জিডি করা হয়। কুমিল্লা জেলা ডিবি পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সম্প্রতি কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত নগরী স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড সরকারি মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ড. এ কে এম এমদাদুল হক এর নামে ফেইক ফেইসবুক আইডি খুলে তা থেকে অর্থের বিনিময়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফল পরিবর্তন করে দেওয়াসহ বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক ও অনৈতিক পোষ্ট দেওয়া হচ্ছে। গত ৫ জুলাই বিষয়টি টের পাওয়ার পর এ বিষয়ে সাধারন ডায়েরী (জিডি) করেন ওই কলেজ অধ্যক্ষ। কুমিল্লা সদর দক্ষিন মডেল থানায় সাধারন ডায়েরী নং-২৩৪। এছাড়া প্রতারণা বিষয়টি কুমিল্লা র্যাব-১১ কে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে মেজর মোঃ আতাউর রহমান ,উপ পরিচালক,কোম্পানি অধিনায়ক,সিপিসি-২,র্যাব-১১ টেলিফোনে অধ্যক্ষ ড. এ কে এম এমদাদুল হক কে জানান, “আপনি চিন্তা করবেন না। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছি।”
এ বিষয়ে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ড. এ কে এম এমদাদুল হক বলেন, আমি একজন বিসিএস (সাধারন শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তা। গত ৩১ অক্টোবর ২০১৬ সাল থেকে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড মডেল কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছি। ইতিমধ্যে আমি ২০১৭ ও ২০১৮ সালে জেলার শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছি। সম্প্রতি কে বা কাহারা আমার নামে ফেইক ফেইসবুক আইডি খুলে তা থেকে অর্থের বিনিময়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফল পরিবর্তন করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অনৈতিক পোষ্ট দিচ্ছে। এতে আমার ও আমার প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে । বিষয়টি বিভিন্ন পরিচিতজনদের মাধ্যেমে আমার নজরে আসার পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ফেইসবুক কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে। ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সিরিয়াসলি নিয়েছে বলে ড. এমদাদকে মেসেজ দিয়ে জানিয়েছে এবং দ্রুতসময়ের মধ্যে ফেইক আইডিটি রিমোভ করবে বলে আশ্বস্থ করেছে।
কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো.রুহুল আমিন ভূইয়া বলেন,অধ্যক্ষ ড. এ কে এম এমদাদুল হক বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। প্রতারক চক্রটি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড,কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পর এবার শিক্ষাবোর্ড মডেল কলেজের অধ্যক্ষের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এ হীন অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এর নেপথ্যে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির ইন্ধন থাকতে পারে। তবে তারা সফল হবে না। আমরা আশা করছি আইন-শৃংখলা বাহিনী অচিরেই তাদের সনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে সক্ষম হবে।