কুমিল্লা লাকসামের একটি পরিবারের বাঁচার আকুতি
মোজাম্মেল হক আলমঃ হতদরিদ্র পরিবারের ছোট্ট শিশু রূপা(১০) ক্যান্সারে আক্রান্ত। সে লাকসাম পৌরসভার উত্তরকুল গ্রামের মৃধা বাড়ির সাজু মিয়ার ছোট মেয়ে। স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণীতে পড়ছে রূপা।
প্রায় ৫ বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে গর্ভধারিণী মা ফরিদা বেগমের মৃত্যুবরণের মধ্য দিয়ে রূপাদের ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় দুর্যোগের ঘনঘটা। নিয়তির নির্মম পরিহাস থেকে রেহায় পায়নি রূপা ও তার বোন রুবি। সম্প্রতি ক্যান্সারের জীবানু ধরা পড়ে রূপার ছোট্ট শরীরে। পিতা সাজু মিয়াও ক্যান্সারে আক্রান্ত। তার বোন রুবির শারীরিক লক্ষণও অশুভ।
সাজু মিয়ার একমাত্র ছেলে সুমন (২০) রাজমিস্ত্রি। তার স্বল্প উপার্জন দিয়ে কোনোমতে চলে পরিবারের ভরণ-পোষণ। তবে অসুস্থ দুই বোন ও পিতার চিকিৎসা চালানো তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে দিনদিন অনিশ্চয়তার দিকেই ধাবিত হচ্ছে তারা।
হতদরিদ্র সাজু মিয়ার অবলম্বন বলতে কেবলই ভিটেমাটি। স্থানীয়দের সহায়তায় তার দুই মেয়ের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পন্ন হলেও তাদের স্থায়ী চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন কয়েক লক্ষাধিক টাকা। যা জোগাড় করা সাজু মিয়ার পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। যদ্দরুন তিনি এখন কেবলই বিত্তশালীদের সহানুভূতির মুখাপেক্ষী।
ক্যান্সারে আক্রান্ত রূপা ও তার অসুস্থ বোন রুবি সুস্থ্য জীবন ফিরে পেতে চায়। তারা আবার একসাথে স্কুলে যেতে চায়। মা হারা সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে সাজু মিয়াও ফিরে পেতে চায় তার সুস্থ্য জীবন। অথচ নিয়তি তাদের মিনতি শোনে না। তাদের চোখের জলে ভেজে না বিত্তশালীদের চিত্ত। নিদারুণ বাস্তবতার সম্মুখে তারা সম্যক অসহায়। তাদের অসহায়ত্বের খবর পৌঁছেনা মানবতার ফেরিওয়ালাদের কানে।
সাজু মিয়ার প্রতিবেশী তরুণ সমাজসেবক ইব্রাহীম খলিল বলেন, ‘সামাজিক ভাবে আমরা আমাদের সাধ্য মোতাবেক সাজু ভাইয়ের পরিবারের পাশে আছি। আমরা স্থানীয় তরুণরা মিলে কিছু আর্থিক সহায়তাও করেছি। তবে তাদের স্থায়ী চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। সবার কাছে আমি আকুল আবেদন করছি, মানবতার সেবায় সাধ্য মোতাবেক এগিয়ে আসুন।’
প্রতিবেশী গোলাফ রহমান বলেন, ‘চিকিৎসার অভাবে রূপার মা মারা গেছেন। বাবা মৃতুশয্যায়। তার বোনের লক্ষণও সুবিধার নয়। চিকিৎসার অভাবে একটি পরিবার এভাবে নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে না। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের চিকিৎসা চালানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু পরিপূর্ণ চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। সবাই সহযোগিতার হাত বাড়ালেই অসহায় এই পরিবারটি আলোর দেখা পাবে।’
দেশ-বিদেশের উদারমনা মানুষের আর্থিক সহায়তাই বদলে দিতে পারে অসহায় এই পরিবারটির দুর্দশার চিত্র। একটু সহানুভূতিতেই তারা ফিরে পেতে পারে সুস্থ্য, সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবন। নশ্বর পৃথিবীর বুকে স্বাচ্ছন্দ্যে কাটাতে পারে আগামী দিনগুলো।