কুমিল্লায় ৩৬ জনের মনোনয়ন বাতিল, নথি থেকে সনদ গায়েবের অভিযোগ
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লায় ১১টি সংসদীয় আসনে মোট ৩৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাতিল হয়েছে কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে বাতিল হয়েছে সর্বোচ্চ ১০ জনের।
বাতিল হওয়াদের মধ্যে তিন জন বিএনপির প্রার্থী আর বেশিরভাগ স্বতন্ত্র। অন্যান্য দলের মধ্যে আছে জাতীয় পার্টি, গণফোরাম, মুসলিম লীগ, এনপিপি, জাগপা, ইসলামী ঐক্যজোট।
রবিবার কুমিল্লা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীরের কার্যালয়ে যাচাই বাছাই শেষে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
কুমিল্লা-১ আসনে তিন জনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা হয়েছে। এদের একজন ইসলামী এক্যজোটের, একজন জাতীয় পার্টির এবং একজন স্বতন্ত্র।
কুমিল্লা-২ আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া পাঁচ জনের মধ্যে একজন জাসদের এবং বাকি চার জন স্বতন্ত্র প্রার্থী যাদের একজন ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে বিএনপির চিঠি পাওয়া কে এম মজিবুল হকের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে গেলেও বিকল্প প্রার্থী হিসেবে আছেন শাহীদা রফিক। বাতিল হওয়া অন্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ জাহাঙ্গীর আলম সরকার। তিনি মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।
অন্যদের একজন করে আছে এনপিপি, জাগপা, গণফোরাম, মুসলিম লীগের। বাকিরা স্বতন্ত্র।
কুমিল্লা-৪ আসনে পাঁচ জনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এদের সবাই স্বতন্ত্র, যাদের একজন বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ছিলেন বিদ্রোহী।
কুমিল্লা-৫ আসনে বিএনপির চিঠি পাওয়া মো. ইউনুসসহ চার জনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। বাকিদের একজন ইসলামী ঐক্যজোট, একজন গণফোরামের এবং একজন স্বতন্ত্র। এই আসনে বিএনপির বিকল্প প্রার্থী শওকত মাহমুদ।
কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির সৈয়দ গোলাম মহীউদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছিল না বলে। এই আসনে বিএনপির বিকল্প প্রার্থী হলেন আমিনুর রশিদ ইয়াসিন, মোস্তাক মিয়া ও মনিরুল হক চৌধুরী।
কুমিল্লা-৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া সব প্রার্থীই বৈধ ঘোষিত হয়েছেন। কুমিল্লা-৮ আসনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে তার পক্ষে জমা দেয়া ভোটারের সইয়ে মিল না থাকায়।
কুমিল্লা-৯ আসনে তিন জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। এদের একজন জামায়াত নেতা এ এস এম সোলায়মান চৌধুরী।
কুমিল্লা-১০ আসনে বিএনপির মনোনয়নের চিঠি পাওয়া আবদুল গফুর ভুঁইয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে খেলাপি ঋণের কারণে। এছাড়া মুসলিম লীগের একজন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর একজনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা হয়েছে।
কুমিল্লা-১১ আসনে জাকের পার্টির একজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।
এদিকে রোববার (২ ডিসেম্বর) প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে আয়কর সনদ না থাকায় মুজিবুল হকের মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার মো. আবুল ফজল মীর।
পরে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে মুজিবুল হক বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের ট্যাক্স ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, সম্পদের বিবরণসহ যাবতীয় কাগজপত্র হফলনামার সঙ্গে নথিতে সংযুক্ত করে দিয়েছি, যার প্রমাণ এবং স্থির ও ভিডিও চিত্র আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। ওই নথি থেকে আয়করের সনদটি গায়েব করার মাধ্যমে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আমি নির্বাচন কমিশনে আপিল করবো।
তবে এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, যেসব প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে বিধি মোতাবেক তথ্য ও কাগজপত্রের ঘাটতি কিংবা ত্রুটি আছে তাদেরই মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে কারও নথি থেকে কাগজপত্র সরিয়ে ফেলার বিষয়টি সঠিক নয়। ওই প্রার্থী ইচ্ছে করলে নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারেন।