দেবীদ্বারে দূর্গা পূঁজা উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতি

মোঃ ফখরুল ইসলাম সাগরঃ আগামী এক সপ্তাহ পরেই শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারর্দীয় দূর্গা পূঁজা । এ উপলক্ষে শেষ মূহর্তে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মন্ডপ গুলিতে প্রতিমা তৈরি ও রং এর কাজ, মন্ডপ সাজানো নিয়ে রাত দিন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ভাস্কররা। এবার দেবিদ্বার উপজেলার ৮৫টি পূঁজা মন্ডপে পূঁজা উদযাপন অনুষ্ঠিত হবে ।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ষষ্ঠী তিথিতে দেবী দূর্গার বোঁধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। আর ৩০সেপ্টেম্বর শনিবার বিজয়া দশমীর পর প্রতিমা বির্সজনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৫ (পাঁচ) দিনব্যাপী অনুষ্ঠানসূচী’র দেবীর আরাধনা। আসন্ন দুর্গোউৎসবকে ঘিরে দেবিদ্বার উপজেলার জনপদে আনন্দের হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
এবার মা দূর্গা আসবেন নৌকায় চরে। ৩০সেপ্টেম্বর শনিবার দেবী ঘোড়ায় চড়ে মর্ত লোক ছেড়ে স্বর্গে গমন করবেন। আর এর মাধ্যমে শেষ হবে দুর্গোৎসব। মা দেবী রেখে যাবে শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যানের বাণী আর আর্শীবাদ। দেবী এসে ধরণীতে গড়ে তুলবেন শস্য ভান্ডার। নিয়ে আসবেন সৃষ্টির সমস্ত সুখ, সমৃদ্ধি আর দূর করবেন যাবতীয় অন্যায় , অথ্যাচার , মন্ডপে মন্ডপে ঢাক ঢোল কাঁশি,বাশিঁ আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হবে আকাশ বাতাস, তাই এগিয়ে চলছে মন্ডপে গুলিতে প্রতিমা তৈরির কাজ। ইতিমধ্যে অনেক মন্ডপে দেবীর আকৃতি মুর্তিতে মাটির লেপন ও রংয়ের কাজ শেষ। ভাস্কররা এখন দিন রাত ব্যস্ত প্রতিমা তৈরির কাজে । আনন্দ ঘন ও প্রানবন্ত পরিবেশে চলছে প্রতিমা তৈরির। গতবারের তুলনায় এবার প্রতিমা মজুরির দাম একটু বেশি। তবুও হিন্দু ধর্মালম্বীরা সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসবটিকে যথাযথ ভাবে পালন করতে সকল নিচ্ছে সককল প্রস্তুতি। চলছে ঘরে ঘরে নতুন জামা কাপড় সহ ঘরের প্রয়োজনীয় যাবতীয় জিনিসের কেনা কাটা করার কাজও ইতিমধ্যে শেষ করেছেন।
‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এই শ্লোগান কে সামনে রেখে হিন্দু-মুসলিম রাজনৈতিক নেতা কর্মীরা যার যার পছন্দের জেলা,উপজেলা ও কেন্দ্রিয় নেতাদের ছবি দিয়ে বেনার ফেস্টুন ও সামাজিক যোগাযোগ ফেইজবুক মাধ্যমে শারর্দীয় দূর্গা পুঁজার অগ্রীম শুভেচ্ছা বিনিময় করা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দেবিদ্বার উপজেলার পুঁজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব বাবু মানিক চক্রবর্তী জানান, এবছর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও১ টি পৌরসভার মোট ৮৫টি মন্ডপে দুর্গা পুজা অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার ৮৫টি পূজামন্ডপ এর মধ্যে ৫৫টি সাধারন, ২২টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৮টি অধিক গুরুত্বপূর্ন রয়েছে। তিনি আরও জানান,এখনও পর্যন্ত উপজেলার কোন মন্ডপে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সর্বত্রই শান্তি পূর্ন পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে উপজেলায় কোন মন্ডপে অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না হয় সেই লক্ষে পূঁজামন্ডপ গুলোর নিরাপত্তায় দেবিদ্বার থানার ওসি মহোদয়ের আয়োজনে সকল পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি/সাধারন সম্পাদক ও প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের উপস্থিতিতে গত সাপ্তাহে এক সম্প্রীতিসভা অুনষ্ঠিত হয়েছে। তাই শান্তি পূর্ন ভাবে পূঁজা উদযাপন করতে দেবিদ্বার উপজেলা বাসীর সকলে সহযোগীতা কামনা করছি।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার ও ব্রাম্মণপাড়া সার্কেল সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার শেখ মোহাম্মদ সেলিম উক্ত প্রতিবেদককে জানান, হিন্দু ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারর্দীয় দূর্গাপুঁজা শান্তি পূর্ন ভাবে উদযাপনরে লক্ষে নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এনিয়ে পূর্জা উদযাপন কমিটির সাথে মিটিং করা হয়েছে, তবে সন্ধার মধ্যেই সকল পূজা মন্ডবে সাউন্ড সিস্টেম মাইক, স্পীকার বন্ধ থাকবে, এবং মন্ডবের আসে পাশে মেলাও বসতে দেওয়া হবেনা। এছাড়াও সার্বিক আইনশৃঙখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে পুলিশ, আনসার ও একটি সেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়ন চেয়াম্যান,ওয়ার্ড মেম্বার ও পূঁজা উদযাপন কমিটির সদস্যদের সমন্বয়ে আইন-শৃংখলা কমিটি গঠন করে শান্তি পূর্নভাবে পূঁজা উদযাপনের লক্ষে ইতি মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।তবে এখনও পযর্ন্ত কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা খবর পাওয়া যায়নি।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান জানান, আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহন করেছি। থানায় কর্মরত এস আই ও  এ.এস.আই দের কে আলাদা ইউনিয়ন ভিত্তিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দুর্গোউৎসব উদযাপনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে দেবিদ্বার থানা পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত। যেকোন আইনি সহায়তা প্রয়োজনে তাৎক্ষনিক জানালে আমরা দশ মিনিটের মধ্যেই ব্যবস্থা নেব। তবে কেউ যদি কোন পূজামন্ডবে অপ্রীতিকর ঘটনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো পড়ুন