কুমিল্লার দুই প্রতারক ‘কখনো এসিল্যান্ড, কখনো সাংবাদিক’
![](https://dailycomillanews.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
ডেস্ক রিপোর্টঃ কখনো সাংবাদিক আবার কখনো সরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার পরিচয়ে দীর্ঘ আট বছর ধরে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন তারা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে এ প্রতারক চক্রের মূলহোতা কথিত সাংবাদিক ও এসিল্যান্ড পরিচয় দেওয়া দুই সদস্য পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন।
পুলিশের হাতে ধরাপরা ওই দুই ব্যক্তি হলেন-কুমিল্লার কোতয়ালী থানার রাজগঞ্জ এলাকার আবদুল্লাহ আল মানসুর (২৮) ও লালমাই এলাকার শিকারীপাড়া গ্রামের মো. আবদুল মোতালেব (২৯)।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মানসুরকে ১০ দিন ও মোতালেবকে সাত দিনের কারাদণ্ড দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবীন্দ্র চাকমা।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার ভানী ইউনিয়নের খাদঘর এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা আদায়কালে এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে ওই দুই ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন এলাকাবাসী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দেবিদ্বার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সোহরাব হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, এ প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন বেকারি, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ফার্মেসি, বাসা-বাড়িতে গিয়ে কখনো সাংবাদিক আবার কখনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে চাঁদা দাবি করত।
ওরা প্রাইভেটকার ভাড়া করে বিভিন্ন খাদ্যের দোকান বা কোম্পানিতে গিয়ে বিএসটিআইয়ের সনদ, ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন কাগজপত্র দেখতে চাইতো। কাগজপত্র দেখাতে না পারলে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করতো।
তিনি আরও বলেন, চাঁদা দিতে অস্বীকার করেলে বা টাকার পরিমাণ কম দিতে চাইলে গাড়িতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বসা আছে বলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা ও পত্রিকায় রিপোর্ট করার হুমকি দিত। কখনো ভুক্তভোগীকে গাড়িতে বসে থাকা ভুয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিয়ে যেত তারা। পরে মোটা অঙ্কের টাকায় রফাদফা হওয়ার পর ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা ছাড়া পেত।
প্রতারক চক্রের এক সদস্য আবদুল মোতালেব আমাদের সময়কে জানান, দীর্ঘ আট বছর ধরে তারা এ কাজে জড়িত। মানুষকে ফাঁদে ফেলে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করাই ছিল তাদের কাজ। গলায় ক্যামেরা ঝুলিয়ে ও বিভিন্ন নামে-বেনামে পত্রিকার ভিজিটিং কার্ডই ছিল তাদের মূল পুঁজি। কোনোভাবেই কাজ না হলে ৯৯৯ এ কল করে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসার জন্য পুলিশে খবর দিতেন তারা। পরে পুলিশ আসলেই এ চক্রের সদস্যরা সেখান থেকে সটকে পড়তেন।
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবীন্দ্র চাকমা বলেন, কথিত সাংবাদিক ও এসিল্যান্ড পরিচয়দানকারী আবদুল্লাহ আল মানসুর ও আবদুল মোতালেব নামে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে যথাক্রমে ১০ দিন ও সাত দিনের সাজা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ এলাকায় আরও কিছু প্রতারক সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্রঃ আমাদের সময়