দেবীদ্বারে ১৪ দিনে ৪ লাশ উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বড়আলমপুর গোমতী নদীর খেয়াঘাট থেকে ভাসমান অজ্ঞাত এক ব্যক্তির গলিত লাশ (২৮) উদ্ধার করেছে দেবীদ্বার থানা পুলিশ। এ নিয়ে গত দু’সপ্তাহে দেবীদ্বারের বিভিন্ন স্থান থেকে ৪টি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ৪টি লাশের দু’টির পরিচয় মিললেও বাকী ২টি এখনো অজ্ঞাতই রয়ে গেছে। তবে ওই লাশগুলোর একটিও দেবীদ্বারের নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার দুপুরে স্থানীয়রা দেবীদ্বার পৌর এলাকার বড়আলমপুর গোমতী নদীর খেয়াঘাট এলাকায় এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ নদীতে ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) আতাউর রহমান একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধারপূর্বক থানায় নিয়ে আসে। শনিবার সকালে লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেঢ়ন করবেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবীদ্বার উপজেলার সংচাইল এলাকা থেকে আজমীর হোসেন ভূইয়া শাওন (২৫) নামের এক ছাত্রলীগ নেতার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে দেবীদ্বার থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় দেবীদ্বার থানা পুলিশ ওই লাশ উদ্ধারপূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে সংচাইল প্রভাতী ফিসারীরর পূর্বদিকে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্থানীয়রা ওই যুবকের লাশ দেখতে পেয়ে দেবীদ্বার থানা পুলিশকে খবর দেয়। সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এ,এস,পি) শেখ মোহাম্মদ সেলিম ও দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং লাশ উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন। দুপুরে নিহতের পিতা থানায় এসে লাশ সনাক্ত করেন। নিহত আজমীর হোসেন ভূইয়া শাওন কসবা টি.আলী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও কসবা উপজেলার পানিয়ারুপ গ্রামের আনোয়ার হোসেন এর পুত্র।
এ ঘটনার দু’দিন পূর্বে অর্থাৎ গত মঙ্গলবার রাতে দেবীদ্বার পৌর এলাকার চেয়ারম্যান বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে অজ্ঞাতনামা (৫৫) এক ব্যাক্তির লাশ উদ্ধার করেছে দেবীদ্বার থানা পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই ডোবায় লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দেয়। রাতে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পরিদর্শক (তদন্ত) সরকার আবদুল্লাহ-আল-মামুন, উপ-পরিদর্শক মোরশেদুল আলম সহ একদল পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বুধবার দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (কুমেক) মর্গে প্রেরণ করেন।
স্থানীয়দের ধারনা জমিজমা, ব্যবসা, টাকা লেন-দেন নিয়ে বিরোধ বা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষ কিংবা ভাড়াটিয়া মাস্তানদের কর্তৃক তাকে অপহরণ করে নিয়ে আসতে পারেন। শারিরীক নির্যাতনে মৃত্যু কিংবা মানষিক নির্যাতনে হার্ট এটাকে মৃত্যু হলে তাকে ওই ডোবায় ফেলে যেতে পারে। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে দেবীদ্বার থানায় মামলা করেছে।
এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার বিকেলে) দেবীদ্বার উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের মধ্যপাড়া একটি খাল থেকে এক যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে দেবীদ্বার থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা ওই দিন বিকেলে যুবকের লাশটি খালের মধ্যে ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এস,আই) মোঃ আতাউর রহমান একদল পুলিশ নিয়ে খাল থেকে লাশটি উদ্ধার করেন। এসময় ওই যুবকের পোষাক এবং আকৃতি দেখে তাকে স্থানীয়রা চিনতে পারে। পরে তার স্বজনেরা এসে লাশটি সনাক্ত করেন। নিহত যুবকের নাম সুমন মিয়া(৪০), সে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা থানার বাইরা গ্রামের ডাঃ সৈয়দ আলীর পুত্র। স্থানীয়রা আরো জানান, পাশ্ববর্তী পেয়ারাকান্দি গ্রামে তার বোনের বাড়িও রয়েছে। প্রায়ই সে এ এলাকায় আসা যাওয়া করত। পুলিশ জানায় ছোরত হাল রিপোর্টে শরিরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
এ ব্যপারে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, দেবীদ্বার গোমতী নদী থেকে উদ্ধার হওযা অজ্ঞাত ব্যাক্তির লাশটি সম্ভবত ৩দিনের হবে, পঁচা গন্ধ বেরুচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ধার হওয়া লাশ গুলোর একটিও দেবীদ্বারের নয়, ৪টি লাশের ২টির পরিচয় মিললেও বাকী ২টি লাশের পরিচয় এখনো মিলেনি। তা ছাড়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই কারন দেবীদ্বারের আইনশৃংখলা জনিত কোন ঘটনার সাথে ওই লাশগুলোর সম্পৃক্ততা নেই। ঘটনাচক্রে এসব লাশ দেবীদ্বার থানা এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে মাত্র।