মুরাদনগরের বেইলী ব্রীজগুলো যেন মরণফাঁদ!
মুরাদনগর (কুমিল্লা) সংবাদদাতাঃ কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার বেইলী ব্রীজগুলো বেহাল অবস্থায় যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় প্রতিটি বেইলী ব্রীজ যেন মরণফাঁেদ তৈরী হয়ে আছে। আর সেই ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহন ও যাত্রীরা বিভিন্ন সময় পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে। সেই ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়েত যানবাহন চলায় যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ-ঢাকা সড়কের নেয়ামতকান্দি বেইলি সেতুর পাটাতন (স্লিপার) ভেঙ্গ বালি বোঝাই একটি ট্্রাক আটকে যায়। এতে ব্যস্ততম এ সড়কটি বন্ধ হয়ে যায়। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত সড়কটি বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে খো যায়, মুরাদনগর উপজেলায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধিন প্রধান গুরুত্বপূর্ন ৫টি আ লিক সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি বেইলী ব্রীজগুলো অবস্থা একেবারেই নাজুক হয়ে পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এসব সড়কগুলোর মধ্যে মুরাদনগর-ঢাকা সড়ক, মুরাদনগর-রামচন্দ্রপুর সড়ক, কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়ক, রামচন্দ্রপুর শ্রীকাইল এবং নবীপুর-শ্রীকাইল সড়কের বেইলী ব্রীজ গুলো একেবারেই জরাজীর্ণ হয়ে মরণফাঁদে পরিণত হয়ে আছে। জরাজীর্ণ এসব সেতুর লোহার পাটাতন (স্লিপার) ভেঙ্গে যাত্রী ও পণ্যবাহী বাস-ট্রাক আটকে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব ব্রীজ দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অধিকাংশ সময় বিকল হচ্ছে ছোট-বড় অনেক যানবাহন। এছাড়া প্রায় অর্ধশত বছর আগে মুরাদনগর-ঢাকা সড়কের থানা সংলগ্ন গোমতীর উপর নির্মিত বেইলী ব্রীজটি খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। ব্রীজটির গুড়া ও পিলারের নিচথেকে মাটি সরেগিয়ে বড় ফাটলের তৈরী হয়েছে।
প্রায় ১১ বছর ধরে এটি একই অবস্থায় আছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরও ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাক চলাচল করছে। ছয় বছর পূর্বে কতৃপক্ষ ব্রিজটি ঝূকিপূর্ন সাইনবোর্ড লিখে আর কোন প্রকার প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা না নিয়েই, তাদের দায়িত্বকে দায় মূক্ত করতে চাচ্ছেন। মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ-ঢাকা সড়কে ছয়টি বেইলি সেতু রয়েছে। প্রতিটি সেতুর পাটাতন (স্লিপার) ভেঙ্গে গেছে। সম্প্রতি পাটাতন ভেঙ্গে বিটুমিন বোঝাই একটি লরি আটকে যায়। এতে ব্যস্ততম এ সড়কে চার ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
একইভাবে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ছালিয়াকান্দি বাজারসংলগ্ন এলাকার বেইলি সেতুটি চালবোঝাই ট্রাকসহ ভেঙ্গে পড়ে। এতে মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ-ঢাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ তিন-চার দিন বিচ্ছিন্ন ছিল। পরে সেতুটি মেরামত করা হলেও ঝুঁকি থেকে যায়। মুরাদনগর-রামচন্দ্রপুর সড়কের করিমপুর নামকস্থানের ব্রীজটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় চুরি হয়ে যাচ্ছে লোহার বিভিন্ন সরঞ্জাম। এ ছাড়া নবীনগর রোডে ছয়টি, রামচন্দ্রপুরে দুটি, বাঙ্গরা-সংচাইল রোডে ছয়টি, মেটাঙ্গর-শ্রীকাইল রোডে চারটি, সংচাইল-কোরবানপুর রোডে তিনটি, ডুমুরিয়া ও পাঁচকিত্তা রোডে দুটি এবং চাপিতলা রোডে একটি বেইলি সেতুরও একই অবস্থা।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের গৌরীপুর সাব-ডিভিশনের সহকারি প্রকৌশলী রমিজ উদ্দিন মুরাদনগর-ইলেয়টগঞ্জ সড়কের ৬টি ব্রীজের মধ্যে সবগুলো ব্রীজই নরেবড়ে অবস্থ্যা কথা স্বীকার করে বলেন, নেয়ামতকান্দি ব্রীজের পাটাতন খুলে গিয়ে গাড়ি আটকিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি খুজঁনিয়ে তারাতারি মেরামতের ব্যাস্থা নেওয়া হবে। নতুন করে ব্রীজ র্নিমানের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমদন হলেই নির্মানের কাজ শুরু হবে।
সড়ক ও জনপধ বিভাগের (সওজ) কুমিল্লা নির্বাহী প্রকৌশলী ড. আহাদ উল্লাহ জানান, নতুন করে ব্রীজ র্নিমানের জন্য তৈরী হচ্ছে। প্রস্তাব গুলো অনুমদন হলেই নির্মানের কাজ শুরু হবে।