প্রজাপতি ডিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার নাম পরিবর্তন নিয়ে এলাকায় তোলপাড়
আশিকুর রহমানঃ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার লাড়–চৌ, দীঘিরপাড় ও দেবিদ্বার উপজেলার প্রজাপতি (৩টি) গ্রাম নিয়ে প্রতিষ্ঠিত প্রজাপতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আবু তাহের সরকার এর প্রতিষ্ঠাতা পদ থেকে নাম পরিবর্তন নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনের মাধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এই ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রতিষ্ঠাতার স্ত্রী সাফিয়া খাতুন উপজেলা নির্বাহী আফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং কুমিল্লা বোর্ডে প্রধানের বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এই ব্যাপারে সরজমিনে ঘুরে ও অভিযোগ পত্রের সত্রে জানা গেছে, প্রজাপতি ডিএল উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৯১ ইং সালে মরহুম আবু তাহের সরকার অত্র এলাকার সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় ও নিজস্ব অর্থায়নে নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় গৃহ নির্মান, টেবিল, চেয়ার, ব্যা , ব্লাক বোর্ড ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র ক্রয় ও নির্মান বাবদ ১০ লক্ষ টাকা আবু তাহের সরকার এর নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করিয়া বিদ্যালয় পরিচালনা শুরু করেন। তখন দীঘিরপাড়, লাড়–চৌ ও প্রজাপতি তিন গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতার জন্য উদ্যোগ নেওয়া, অর্থ ব্যায়, সময় দিয়ে আসবাবপত্র ক্রয় ও গৃহ নির্মান করায় এলাকার জনগনের সমর্থনে এবং প্রতিষ্ঠাকালীন পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মতে আবু তাহের সরকারকে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ঘোষনা করা হয়।
পরে বর্তমান ২ নং প্রতিষ্ঠাতা আবুল কাসেম সরকার গত ২০/০৩/২০১৩ ইং তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড কুমিল্লা এর আদেশ বলে তাহার নাম অর্ন্তভূক্তি করিলে তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আবু তাহের সরকারকে প্রতিষ্ঠাতা পদ থেকে বাদ দেওয়ার জন্য পায়তারা করিয়া আসিতেছে। উল্লেখ্য বর্তমান ২য় প্রতিষ্ঠাতা আবুল কাসেম সরকার গত ১৬/০১/১৯৯৭ ইং তারিখে অত্র বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। সেই সময়ও মরহুম আবু তাহের সরকার বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিদ্যমান ছিলেন। পরবর্তিতে বে-আইনি ভাবে প্রতিষ্ঠাকালীন প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আবু তাহের সরকার এর নাম পরিবর্তন অপচেষ্টা করে নিজের নাম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দাবী করিয়া আসিতেছে। আরো জানা যায়, প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের বিলবোর্ড অফিস কক্ষে মরহুম আবু তাহেরের নাম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে উল্লেখ আছে। এই ব্যাপারে এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের মধ্যে মোঃ কিতাব আলী হাজী, অদুধ মিয়া, নজরুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন সহ আরো অনেকেই জানান, ১৯৯১ ইং সাল থেকে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৭ ইং সালে দীঘিরপাড়, লাড়–চৌ ও প্রজাপতি (তিন) গ্রামের লোকজন মিলে সভা করে কমিটি করা হয়। উক্ত কমিটিতে আবু তাহের সরকারকে প্রতিষ্ঠাতা ও আবুল কাসেম সরকারকে সভাপতি করা হয়। ঐ সময় তৎকালীন প্রধান শিক্ষক জানান, উক্ত বিদ্যালয়টি ১৯৯১ ইং সালে স্থাপিত হয়। ১৯৯৬ ইং সালে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। ১৬/০১/১৯৯৭ ইং তারিখে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় আবু তাহের সরকার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নির্বাচিত হয়। এর কিছু দিন পর আবু তাহের সরকার মৃত্যুবরণ করেণ।
এই ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলার কুমিল্লা-৪ আসনের মাননীয় সাংসদ রাজী মোহাম্মদ ফকরুল তার নিজস্ব প্যাডে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান এর নিকট প্রজাপতি ডিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মরহুম আবু তাহেরকে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য আবেদন করেন।
এই ব্যাপারে বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ মামুনুর রশিদ আখন্দ জানান, উক্ত উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৯১ ইং সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৬ ইং সালে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৯৭ ইং সালে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় মোঃ আবু তাহের সরকার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নির্বাচিত হয়। পরবর্তিতে তিনি মৃত্যুবরণ করলে ২০/০৩/২০১৩ ইং তারিখে প্রতিষ্ঠাতা ক্যাটাগরিতে আবুল কাসেম সরকার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয়। এই ব্যাপারে বর্তমান প্রতিষ্ঠাতা আবুল কাসেম সরকার বলেন, আবু তাহের সরকারের বৈধ কোন কাগজপত্র না থাকায় বর্তমানে আমি প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত।