কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড ও বোর্ড মডেল কলেজ মুখোমুখি !
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড মডেল কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তার প্রতি সংক্ষুব্ধ শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান। এবারের শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শুধু বোর্ড চেয়ারম্যানই নন, মন্ত্রণালয়ের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি পর্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন। অ্যাডিশনাল সেক্রেটারির নাম ভাঙিয়ে ভর্তি পরীক্ষা রহস্যজনক কারণে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বোর্ডকে পাশ কাটিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে করতে তিনি মিথ্যার আশ্রয় নেন। গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য ফাঁস হলে বোর্ডজুড়ে হইচই শুরু হয়। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত শিক্ষা বোর্ডকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে বলে বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মনে করছেন।
জানা গেছে, নগরীর শাকতালয় ২০০৬ সালে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড তাদের নিজস্ব অর্থায়নে নিজস্ব জমিতে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড মডেল কলেজ ও স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। সেই থেকে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় ব্যয়ভার কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড বহন করছে। প্রতিষ্ঠানটি সরকারিকরণের প্রস্তাব থাকলেও এখনো কোনো অনুদান আসেনি। বোর্ড কর্তৃপক্ষ প্রতিমাসে ১৭ লাখ টাকা করে এ প্রতিষ্ঠানের পেছনে ব্যয় করছে। এ কারণে ভর্তি পরীক্ষাগুলো বোর্ডই নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু এ বছর কোনো পরামর্শ ছাড়া কলেজের অধ্যক্ষ ড. একেএম এমদাদুল হক বোর্ডকে পাশ কাটিয়ে রহস্যজনকভাবে ভর্তি তদারকির দায়িত্ব জেলা প্রশাসনকে দিতে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেন। এ চিঠির পরই বোর্ড ও অধ্যক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ তার কাছে জানতে চাইলে তিনি অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি ও কলেজের ম্যানেজিং বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হকের মৌখিক নির্দেশে তা করেছেন বলে জানান।
তবে এ বিষয়ে অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি নাজমুল হক কোনো নির্দেশনাই দেননি বলে বোর্ড চেয়ারম্যানকে নিশ্চিত করে বলেছেন অধ্যক্ষ আমাকে ফোন করে ভর্তির কার্যক্রম জেলা প্রশাসনকে দিতে অনুমতি চেয়েছেন। আমি তাকে সরাসরি কোনো অনুমতি দেইনি। বলেছি বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন।
এ ছাড়া গত বছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৮০ শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি থাকলেও তিনি ভর্তি করেছেন ৯৫ শিক্ষার্থী। যা বোর্ড কর্তৃপক্ষ অবগত ছিল না। তা ছাড়া মেধা তালিকার বাইরে থেকেও অনেককে ভর্তি করিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ওই সব ভর্তি অর্থের বিনিময়ে করানো হয়েছে বলে তার বিরুদ্ধে ওই বছরই শিক্ষামন্ত্রী বরাবর দরখাস্ত করেছিলেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে ড. একেএম এমদাদুল হক বলেন, ‘কলেজের তিন সদস্যের একটি অভ্যন্তরীণ ভর্তি কমিটি ছিল। ওই কমিটি এত বছর ভর্তি সংক্রান্ত সব কাজ করত। আগামী ২৭ ডিসেম্বর ভর্তি পরীক্ষা হবে। এ বছর শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নিতে যাচ্ছি।’ তিনি দাবি করেন ‘বোর্ড চেয়ারম্যানের নলেজে দিয়েই তা করছি।’ তবে তিনি অন্য অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ও কলেজের ম্যানেজিং বোর্ডের সিনিয়র সহসভাপতি প্রফেসর মো. আবদুস সালাম বলেন, আমি আজ (মঙ্গলবার) ঢাকায় আছি। অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি নাজমুল হকের সঙ্গে এ বিষয়ে আমার কথা হয়েছে। তিনি অধ্যক্ষের প্রতি সংক্ষুব্ধ। অধ্যক্ষ আমাকে বলেছিলেন অ্যাডিশনাল সেক্রেটারির নির্দেশ রয়েছে। আসলে তা নয়। অধ্যক্ষ এ ঘটনায় মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন।
সূত্রঃ আমাদেরসময়