কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সরকারি আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গড়ে উঠছে ইটভাটা
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সরকারি আদেশের কোন তোয়াক্কাই না করে কৃষি জমিতে গড়ে উঠেছে নতুন ইটভাটা। এতে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার কৃষি জমিসহ আশ-পাশের বাড়িঘর।
স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশনা না মেনে উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের ছাতিয়ানি গ্রামে এলজিইডির সড়কের পাশের নির্মাণ করা হচ্ছে এসব অবৈধ ইটভাটা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ছাতিয়ানি গ্রামের মৃত খিদির আলীর ছেলে আহসান হাবিব মজুমদার পরিবেশ অধিদপ্তরসহ প্রশাসনের কোনো প্রকার অনুমোদন না নিয়েই ওই ইটভাটা স্থাপন কাজ শুরু করেন। আহসান হাবিব মজুমদার এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।
এদিকে, পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ৩ মার্চ ছাতিয়ানি গ্রামে অবৈধভাবে ওই ইটভাটা নির্মাণের খবর পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শওকত আরা কলির নেতৃত্বে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে নির্মাণাধীন ওই ভাটার মালিক আহসান হাবিব মজুমদারকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ১৮ মার্চ বুধবারের মধ্যে নিজ দায়িত্বে ওই ইটভাটা ভেঙে অপসারণের নির্দেশ প্রদান করা হয় তাকে।
সরজমিনে বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) গিয়ে দেখা গেছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের এই নির্দেশনার কোন তোয়াক্কাই করেননি প্রভাবশালী আহসান হাবিব মজুমদার। তিনি ইটভাটা থেকে একটি ইটও অপসারণ করেননি। তবে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে হাবিব অপসারণ না করলেও কৌশলে ইটভাটাটি নির্মাণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে নতুন করে ইটভাটা নির্মাণ বন্ধের একটি আইন তৈরি করে সরকার। এছাড়া ফসলি জমিতে নতুন করে আর যেন কোনো ইটভাটা তৈরি হতে না পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা অমান্য করে প্রভাবশালী মহল কৃষি জমি ভরাট করে নতুন করে ইটভাটাটি স্থাপনের চেষ্টা করছে।
ইতিমধ্যে ইটভাটাটি স্থাপনের জন্য আশ-পাশের বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি দখল ও গাছ-পালা কেটে সাফ করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি জানান, আমরা তাকে জরিমানা করে ১৮ মার্চের মধ্যে নির্মাণাধীন ইটভাটাটি নিজ দায়িত্বে ভেঙে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলাম। তিনি এটা না ভেঙে উল্টো ৬ মাস সময় চেয়ে আবেদন করেছেন, তবে আমরা এখনো তাকে সময় দিইনি। এছাড়া গতকাল (১৮ মার্চ) আমাদের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আহসান হাবিবের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তথ্য নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইটভাটার মালিক আহসান হাবিব মজুমদার বলেন, ইতিমধ্যে ইটভাটা নির্মাণের প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ করেছিলাম। আমার অনেক টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। এখন পরিবেশ অধিদপ্তর নির্দেশ দিয়েছি এটা ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার জন্য। আমি তাদের কাছে ৬ মাস সময় চেয়েছি। যদি এর মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না পাই, তাহলে আইন মেনে এটি ভেঙে সরিয়ে নিবো।
সূত্রঃ বার্তা২৪