কুমিল্লা জেলার মোকাম ইউনিয়নের আবিদপুর গ্রামের চট্টগ্রাম পাড়ার ফরায়াজী বাড়িতে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বাড়ি-ঘরে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে আবু আহাম্মদ ওরপে আবু বাহিনী। এ সময় কমপক্ষে ৭/৮টি বাড়ি-ঘরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৪শে এপ্রিল) ভোর রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঘণ্টাব্যাপী চালানো তা-বে ৩জন আহতসহ কমপক্ষে ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট ও ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। আহতরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কুমিল্লা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী রিনা বেগম বাদী হয়ে সন্ত্রাসী আবু আহাম্মদসহ অন্তত ২০জনকে আসামী করে বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন জানায়, আবিদপুর গ্রামের সাধারন মানুষের কাছে এক আতঙ্কের নাম ওই গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে আবু আহাম্মদ ওরফে সন্ত্রাসী আবু। ওই গ্রামের বিভিন্ন পরিবারের উপর অনেকদিন ধরেই অত্যচার করে আসছিল তার নেতৃত্বের আবু বাহিনী। ওই এলাকার বেশিরভাগ পুরুষ প্রবাসে থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে থাকা মহিলা ও বৃদ্ধরা অত্যাচার সহ্য করেও তার ভয়ে মুখ খোলে না। এভাবে একের পর এক বাড়তেই থাকে তার অত্যাচারের মাত্রা।
=> কুমিল্লায় মাদক সেবী আ'লীগ নেতার হাতে শিক্ষক লাঞ্চিত
=> বুড়িচংয়ে যুবলীগ নেতা আবুর বাড়ী থেকে ৬ জুয়াড়ী আটক
=> বুড়িচংয়ে আবিদপুর কলেজ অভিভাবক কমিটির পদে নির্বাচন কেন্দ্র করে এক প্রার্থীর উপর হামলা
প্রবাসী জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রিনা বেগম জানান, গত কয়েকদিন ধরে তার বাড়িতে এসে চাঁদা দাবি করে সন্ত্রাসী আবু। বৃহস্পতিবার রাতে তার সন্ত্রাসী বাহীনি নিয়ে বাড়িতে এসে আবু টাকা না দিলে খবর আছে বলে হুমকি দামকি দিতে থাকে। তখন কোন উপায় না পেয়ে জরুরী সেবা ৯৯৯ কল দিলে বাড়িতে পুলিশ আসে, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তার বাহিনী বাড়ী থেকে পালিয়ে যায়। কেন পুলিশকে ফোন দিল, এ বিষয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে শুক্রবার ভোর রাতেই আবু তার বাহিনী নিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট করে। ঘরে থাকা টিভি, ল্যাপটপসহ আসবাপত্র ভাংচুর করে নগদ টাকা ও স্বর্ণলঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় প্রবাসী জাহাঙ্গীরের প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয় বলে জানান তিনি।
মৃত মোস্তফার স্ত্রী জানান, আমার বাড়িতে আমি আর আমার ছেলে থাকি। অন্যান্য দিনের মত শুক্রবার ভোরেও ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার ঘরের দরজা, জানালা কুপিয়ে ঘরে ডুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বর্ন-অলংকার, নগদ টাকা নিয়ে গেছে সন্ত্রাসী আবুর বাহিনী। এতে অন্তত ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয় বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবিদপুর গ্রামের অর্ধশতাধিক সাধারন মানুষ জানায়, আবিদপুর গ্রামে অসংখ্য সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মূলহোতা এই আবু। তার বিরুদ্ধে হত্যা, গরু চুরি, ডাকাতি, শিক্ষক লান্সিত, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে ৬টিরও অধিক মামলা রয়েছে। এতসব সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পরও আবু কে প্রত্যক্ষ ভাবে মদদ দিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জামাল হোসেন। সাধারন মানুষ বলেন, মূলত এলাকায় নিজের অবস্থান ধরে রাখতে আবু বাহিনীকে ব্যবহার করে চলেন নেতা জামাল হোসেন। তাই আবু“র পুলিশ কিংবা যেকোন সমস্যা সমাধানে প্রথমেই এগিয়ে যান জামাল হোসেন। আবু বাহিনীর অত্যাচার থেকে বাচঁতে জেলা পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপেক্ষর সহযোগিতা চেয়েছেন এলাকার নিরীহ মানুষ।
আশ্রয়দাতা হিসেবে অভিযুক্ত জামাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি আবু‘র সন্ত্রাসী কাজের মদদ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এছাড়া প্রবাসীর বাড়িতে ওই দিনের সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে তিনি এলাকাবাসীর কাছ থেকে শুনেছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিবেদককে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে আবু আহাম্মদের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার ব্যবহৃত নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক জানান, এ ঘটনায় বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি তদন্তের জন্য দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ীর এস আই নন্দন চন্দ্র সরকারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com