কুমিল্লা সদর দক্ষিণে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না
কুমিল্লা সদর দক্ষিণে চলমান প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শারীরিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না।
ঘর থেকে বের হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং মুখে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর এই নির্দেশনা অমান্য করা হলে অর্থাৎ মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হলে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জরিমানা ও ৬ মাসের জেলের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধির যে কোন একটি না মানলে ৩ মাসের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানারও বিধান রয়েছে। পাশাপাশি উভয় দন্ডে দন্ডিত হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
তবে সরকারের নির্দেশনা থাকার পরও সদর দক্ষিণ উপজেলায় আগের মতোই চলাফেরা করছে সর্বত্র জনসাধারণ। অনেকেই মুখে মাস্ক ছাড়াই বাইরে চলাফেরা করছেন করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে।
বাজারে কেনাকাটা করছেন একেবারে গাঁয়ে গাঁ ঘেঁষে যে যার মতো। অনেকেই আবার ঘুরছেন বাজারে কিংবা সড়কে। সাধারণ ছুটির পর জীবন ও জীবিকার তাগিদে সীমিত পরিসরে সবকিছু খুলে দেওয়ার পর থেকে এ অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে মানুষ যেন করোনা ভুলতে বসেছেন।
সোমবার (৬ জুলাই) উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড,বিজয়পুর বাজার সহ দেখা যায়, কেউ কেউ মাস্ক পরলেও অনেকের মুখে মাস্ক নেই। অনেকে কথা বলার সময় মাস্ক খুলে ফেলছেন। বাজারের কয়েকজন দোকানি বলেন, আমরা ক্রেতাদের দূরে দাঁড়াতে, মাস্ক পরতে ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলি। কিন্তু ক্রেতারা অসন্তোষের ভাব নিয়ে কোন কথাই শুনতে চান না। বাজারে পণ্য কিনতে আসা জাকির হোসেন নামে এক ক্রেতা জানান, দেশে করোনার ভয়াবহ অবস্থা। এরপরও মানুষ সচেতন হচ্ছেন না। তিনি বাইরে মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রশাসনের অভিযান চালানোর তাগিদ দেন। অপরদিকে গ্রামাঞ্চলের হাটবাজারে মানুষজন মুখে মাস্ক তো লাগাচ্ছোই না, সামাজিক দূরত্ব পর্যন্ত মেনে চলছেন না।
বিশেষ করে সদর দক্ষিণের দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখার বিধি চরমভাবে লংঘন করতে দেখা যাচ্ছে। ইদানিং এক শ্রেণির পণ্য ব্যবসায়ী রাত ৯ টার পরও দোকান খোলা রাখছেন। পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড,শুয়াগন্জ , চৌয়ারা, লালমাই,বিজয়পুর সহ বিভিন্ন সড়কে কনফেকশনারি, হোটেল রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য দোকানপাট দিব্যি খোলা থাকছে। ওইসব ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠানের অর্ধেক শার্টার বা ঝাপ খুলে দেদারছে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। প্রশাসনের লোকজন আসা মাত্রই দোকান বন্ধ করছেন। আবার তারা চলে যাওয়ার পর দোকান খুলে রাখছেন। তারা সরকারের স্বাস্থ্যবিধির ধার ধরছেন না। এসব ব্যবসায়ীদের কারণে অধিক রাত পর্যন্ত অসংখ্যক মানুষ বাইরে চলাফেরা করছে। এ সব ব্যবসায়ীরা নিজেরাও বিধি মানছেন না, উল্টো অন্যদের অযথা বাইরে বের হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছেন। ফলে উপজেলার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের চলাচল দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় সচেতন মহল উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট মিয়া মোহাম্মাদ কেয়ামউদ্দিনর কাছে স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরার বিষয়ে জানতে চাইলে জানান,উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য ৫ হাজার মাস্ক,সাবান এবং হেন্ড সেনেটাইজার দেওয়া হবে। দেওয়ার পর যদি কেউ মাস্ক না পরে ঘোরাঘুরি করে,পরবর্তীতে আইন অমান্য করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।