কুমিল্লার লাকসামের তিন সদ্যোজাতকে বাঁচাতে মাদ্রাসা শিক্ষকের আকুতি

কুমিল্লার লাকসাম জেনারেল হাসপাতালে গত বুধবার দুপুরে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচার ছাড়াই একে একে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন শারমিন আক্তার নামের এক গৃহবধূ। এর মধ্যে তিনজন ছেলে ও দুজন মেয়ে।
জন্মের পর শিশুদের ওজন কম হওয়ায় তাদের নিয়ে কুমিল্লা মডার্ন হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন শারমিনের স্বামী মাদ্রাসার শিক্ষক মিজানুর রহমান। যাওয়ার পথে অক্সিজেনের অভাবে এক ছেলে ও এক মেয়ে মারা যায়। অপর তিনজনকে কুমিল্লা মডার্ন হাসপাতালের ইনকিউবেটরে রাখা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে তাদের ঢাকা শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে শয্যা না পেয়ে ধানমন্ডির উইমেন্স অ্যান্ড চিলড্রেন জেনারেল হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হয়।
বর্তমানে তিন শিশু ওই হাসপাতালের ইনকিউবেটরে আছে। তাদের চিকিৎসা বাবদ প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা করে খরচ হচ্ছে। এত টাকা খরচ বহন করার সামর্থ্য নেই মাদ্রাসার শিক্ষক মিজানুর রহমানের। এই অবস্থায় তিন নবজাতককে বাঁচাতে দেশের হৃদয়বান মানুষদের প্রতি আকুতি জানিয়েছেন তিনি।
লাকসাম জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ লতিফা আক্তার বলেন, ওই প্রসূতি নারী সাত মাসের গর্ভবতী ছিলেন। হাসপাতালে আসার পর তার আলট্রাসনোগ্রাফি করা হয়। এতে দেখা গেছে তার পেটে চারটি বাচ্চা আছে। এরপর তাকে স্যালাইন দেওয়া হয়। পরে তিনি স্বাভাবিকভাবে একে একে পাঁচটি বাচ্চা প্রসব করেন। ৭ থেকে ১০ মিনিটের ব্যবধানে বাচ্চাগুলো একে একে ভূমিষ্ঠ হয়। কিন্তু ওদের ওজন কম ছিল। ফলে মা ও বাচ্চাগুলোকে উন্নত পরিবেশে ইনকিউবেটরে রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।
নববজাতকদের বাবা চৌদ্দগ্রাম নুরানি মাদ্রাসার শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, এর আগে তার প্রথম সন্তান (ছেলে) দুই বছর আগে মারা যায়। এবার পাঁচ সন্তান হওয়ায় তিনি মহাখুশি হয়েছিলেন। কিন্তু এরই মধ্যে দুজন মারা গেছে। এখন তিন নবজাতককে বাঁচাতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘মাদ্রাসা থেকে মাসে ছয় হাজার টাকা বেতন পাই। এই টাকায় সংসারই চলে না। এরই মধ্যে এই অবস্থা।’