কুমিল্লায় সন্তান হত্যার বিচার চাইলেন সুইপার বাবা
‘আমরা হরিজন। তাই বলে কি আমরা বিচার পাবো না। কোথায় গেলে সন্তান হত্যার বিচার পাবো।’ এভাবেই আর্তনাদ করে সন্তানের হত্যার বিচার চাইলেন মনা লাল সুইপার।
হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন কল্পনা রানীর হত্যার বিচার চেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা নগরীর সুজানগরের সুইপার কলোনিতে একটি সভা করেন। সেখানে মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করেন বাবা মনা লাল সুইপার।
বাবার অভিযোগ, যৌতুক না দেয়ায় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনে মারা যান কুমিল্লার মেয়ে কল্পনা রানী। গত ৮ মে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
নিহত কল্পনা রানী কুমিল্লা নগরীর আদর্শ সদর উপজেলার সুজানগর সুইপার কলোনীর মনা লাল সুইপারে মেয়ে। কল্পনা রানীর দুই ছেলে রয়েছে।
জানা যায়, ৩ বছর আগে বিয়ে হয় নরসিংদী জেলার রাজু লাল বাঁশফোর ও কুমিল্লার কল্পনা রানীর। বিয়ের পর থেকে কল্পনা রানীর পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল রাজু লাল বাঁশফোর ও তার পরিবারের সদস্যরা।
কল্পনা রানীর বাবা নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৩ ভরি স্বর্ণ, ১৬ ভরি রূপা অন্যান্য আসবাবপত্র জিনিসপত্র প্রদান করেন। গত ৭ মে যৌতুকের টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। এমন অবস্থায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মারধর করে। কল্পনা রানীর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় স্থানীয়রা কল্পনাকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন হাসপাতালে ভর্তি করেন। আগুনে তার শরীরে ৯৪ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ মে কল্পনা রানীর মৃত্যু হয়।
এদিকে কল্পনা রানীর স্বামীর পক্ষের দাবি কল্পনা নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সভায় অংশ গ্রহণ করেন বাংলাদেশ বাঁশফোর হরিজন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- সাধারণ সম্পাদক পুনম বাঁশফোর, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নসিব বাঁশফোর, কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক গোপাল বাঁশফোর, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক জীবন বাঁশফোর, সহ-প্রচার সম্পাদক রতন বাঁশফোর, কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক সদস্য নয়ন বাঁশফোর, শাওন বাঁশফোর, ভুলন বাঁশফোর, বাংলাদেশ হরিজন ঐক্যি পরিষদের কুমিল্লা জেলা শাখার সহ-সভাপতি বালাম বাঁশফোর, জামাল বাঁশফোর, রংলাল বাঁশফোর, সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক নিমাই লাল বাঁশফোর, সহ-সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বাঁশফোর,সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক মজনু বাঁশফোর, অর্থ সম্পাদক সুমন বাঁশফোর, সমাজকর্মী নাদিম বাঁশফোর, কমল বাঁশফোর ও ভুট্টু বাঁশফোরসহ অন্যান্যরা।