কুমিল্লা সদর দক্ষিণে প্রতিবন্ধী মায়ের পাশে ইউএনও রূপালী মন্ডল
ডেইলিকুমিল্লানিউজ ডেস্কঃ ফেসবুকের কল্যাণে অবশেষে কুমিল্লা সদর দক্ষিণের গোয়ালগাঁও গ্রামের পরিত্যক্ত ঘরে বসবাসকারী প্রতিবন্ধী মা রাহেলা খাতুনের পাশে দাঁড়িয়েছেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রূপালী মন্ডল। বুধবার তিনি সেই প্রতিবন্ধীর বাড়ীতে গিয়ে আর্থিক সহায়তাসহ তার জন্য ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করেন।
সূত্রমতে, ১০ নভেম্বর দুপুরে একটি ফেইসবুক আইডি থেকে ‘অসহায় পঙ্গু মায়ের আর্তনাদ’ শিরোনামে একটি মানবিক পোষ্ট করা হয়। পোষ্টে উল্লেখ করা হয়, হাতে জোতা (জুতা) লাগিয়ে কোমরে ভর করে মাইলের পর মাইল মানুষের দরজায় দরজায় যায় সামাণ্য (সামান্য) সাহায্যের আশায়, তাহার ছেলেরা দিনমজুর যা পায় তা দিয়ে নিজেরাই চলতে পারে না, মাকে দেখবে কিভাবে এমনটাই বলছেন এই মা, এই মায়ের জন্য একটি পঙ্গু (প্রতিবন্ধী) ভাতা প্রদানে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের প্রতি অনুরোধ জ্ঞাপন করছি। পোষ্টের শেষে পঙ্গু মায়ের নাম ঠিকানা ও একটি ছবি আপলোড করা হয়।
ফেসবুকের কল্যাণে পোষ্টটি ১৩ নভেম্বর রাতে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রূপালী মন্ডলের নজরে পড়ে। খোঁজ নিয়ে ১৫ নভেম্বর সকালে ইউএনও রূপালী মন্ডল উপজেলার পূর্ব জোড়কাননের গোয়ালগাঁও গ্রামের মৃত আমীর হোসেনের স্ত্রী প্রতিবন্ধী রাহেলা খাতুনের বাড়ীতে যান। ওই সময় ইউএনও একান্তে তার সাথে সার্বিক বিষয়ে কথা বলে জানতে পারেন, রাহেলা খাতুন একজন প্রতিবন্ধী। সরকার থেকে তিনি নিয়মিত প্রতিবন্ধী ভাতা পান। এ ভাতায় তার অন্ন জোটে। বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থানের জন্য তিনি প্রতিনিয়ত হাত ও কোমরে ভর করে সাহায্যের জন্য বাড়ী বাড়ী ঘুরে বেড়ান। রাত কাটান পরিত্যক্ত ঘরে। ঝড়-বৃষ্টিতে পানি পড়ে ঘরে। ৩ ছেলে থেকেও নেই। একজন অটো চালক, বাকি দুজন দিনমজুর। তারা নিজেরাই সংসার চালাতে হিমশিম খায়। বোঁঝা হতে পারে মনে করে প্রতিবন্ধী মা ছেলেদের থেকে আলাদা বসবাস করে।
পরে সরকারি সহায়তা হিসেবে ঘর নির্মাণের জন্য প্রতিবন্ধী রাহেলা খাতুনের হাতে নগদ ৬ হাজার টাকা ও ১৬ পিচ টিন তুলে দেন ইউএনও রূপালী মন্ডল। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান হারিস মিয়া ও পিআইও অফসি সহকারী আবুল কাশেমসহ স্থানীয় গণ্যমাণ্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৃদ্ধা রাহেলা খাতুন বলেন, আমি আগে থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। তবে ঘর ছিল না। ইউএনও সরকারিভাবে আমাকে ঘর করে দিচ্ছে।
ইউএনও রূপালী মন্ডল বলেন, ফেসবুকের ইতিবাচক ব্যবহারের মাধ্যমে সাধারন মানুষ এখন খুব সহজেই অনেক বিষয় প্রশাসনের নজরে আনতে পারেন। জনবান্ধব প্রশাসন সিটিজেন জার্নালিজমকে খুবই গুরুত্ব দেয়। তাই সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবার ক্ষেত্রে প্রশাসন ও জনগণের একই সূত্রে আবদ্ধ হবার সুযোগ সৃষ্টি হয়।