এবার সার্টিফিকেট পোড়ালেন ঢাকা কলেজের ছাত্র

এবার নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়েছেন ঢাকা কলেজের সাবেক এক শিক্ষার্থী। তার নাম আব্দুস সালাম। দীর্ঘদিন ধরে চাকরির পিছনে ঘুরেও না পাওয়ার হতাশা থেকে তিনি এমন কাজ করেছেন। মঙ্গলবার (৩১ মে) রাতে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌরশহরে একটি রেস্টুরেন্টের ভেতর সালাম তার সার্টিফিকেটগুলো আগুনে পুড়ান।

সার্টিফিকেট পোড়ানোর ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে অনেকেই এর পক্ষে বিপক্ষে নানান মন্তব্য করেন। আব্দুস সালাম মোহনগঞ্জ পৌরশহরের দেওথান গ্রামের শামছুর রহমানের ছেলে। শহরের স্টেশন রোডে ‘কুটুম বাড়ি’ নামে তার একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। চাকরি না পেয়ে এটি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন।

সংবাদমাধ্যমকে আব্দুস সালাম জানান, ২০০৬ সালে মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০০৮ সালে ময়মনসিংহের আলমগীর মনসুর (মিন্টু) মেমোরিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। পরে ২০১৬ সালে ঢাকা কলেজ থেকে দর্শন শাস্ত্রে অনার্স মাস্টার্স সম্পন্ন করেন সালাম।

পড়াশোনা শেষে এনএসআই, রেলওয়ে ও পুলিশের এসআইসহ বিভিন্ন চাকরিতে আবেদন করেও তার চাকরি হয়নি। চাকরির বয়স শেষে হতাশ হয়ে নিজের শহরে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে সালাম বলেন, সনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছি রেজাল্টও ভালো, কিন্তু অসংখ্য আবেদন করেও চাকরি হয়নি। অথচ লবিং- ঘুষে অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীরাও চাকরি পেয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এখন আমার বয়স ৩৬ বছর। সরকারি-বেসরকারি কোন চাকরিতেই আর আবেদনের সময় নেই। অকেজো এই সার্টিফিকেট তাই পুড়িয়ে দিলাম। সরকারি চাকরির বয়স সীমা বাড়ানোর দাবি জানাই। এতে আমার না হোক পরবর্তী প্রজন্ম উপকৃত হবে। তাদের হয়তো এভাবে হতাশায় আর সার্টিফিকেট পুড়াতে হবে না।

সালাম আরও বলেন, আওয়ামী পরিবারের সন্তান হয়ে শুরু থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম। গ্রুপিং রাজনীতি চাকরি পাওয়ার জন্য ক্ষতিকর হয়েছে। বয়স সীমা সবার জন্য না বাড়িয়ে সার্টিফিকেট পুড়ানোর কারণে ইডেন কলেজ ছাত্রী মুক্তাকে চাকরি দেওয়া ঠিক হয়নি উল্লেখ করে সালাম বলেন, এটা মন্ত্রী মহোদয় ঠিক করেননি। একজনের জন্য আলাদা নিয়ম হতে পারে না। সবার জন্য চাকরির বয়স সীমা বাড়ানো দরকার। তাহলে সবাই এ সুযোগটা পাবে।

এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, এভাবে সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলা ঠিক নয়। পড়াশোনা আসলে চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, জ্ঞান অর্জনের জন্য। এ জ্ঞান জীবনের সবক্ষেত্রেই কাজে লাগবে। সবার তো চাকরি হয় না। তাই চাকরির চেষ্টার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে। তাহলে এই হতাশাগুলো আর থাকবে না।

আরো পড়ুন