পবিত্র কোরআনে হাফেজ হলেন অন্ধ আমান উল্লাহ

হাফেজ আমান উল্লাহর বয়স ২৪ বছর। জন্মের পর থেকেই তিনি চোখে দেখেন না। নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে পবিত্র কুরআন মাজিদের ত্রিশ পারা সম্পূর্ণ মুখস্থ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এখানেই থামতে চাননা আমান। এখন উচ্চ আলেম হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কিতাব খানায় পড়ছেন।

এর মধ্যে মাদরাসায় জালালাইন শরীফ তার শেষ হতে চলেছে। আমান বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের দেবগ্রাম মাজহারুল হক দারুল উলুম মাদরাসায় পড়াশুনা করছেন। তিনি জেলার কসবা উপজেলার খিদিরপুর গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে। দুই ভাই চার বোনের মধ্যে আমান উল্লাহ সবার ছোট। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আমান উল্লাহ নিজের ইচ্ছাশক্তি নিরলস পরিশ্রম আর চেষ্টা সাধনায় আল্লাহর অশেষ রহমতে তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছেন।

পবিত্র কুরআনই একমাত্র কিতাব, যেটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুখস্থ করা যায়। কুারআন মুখস্থকারীর জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নানা পুরস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। হাদিস শরীফে কুরআন তেলওয়াতকারী, কুরআনের হাফেজ ও কুরআনের ধারক-বাহকদের মর্যাদার কথা বলা হয়েছে।

একটি সংবাদমাধ্যমকে হাফেজ আমান উল্লাহ জানান, জন্ম থেকে তিনি অন্ধ। দুনিয়ার কিছু দেখতে পান না। তার জন্মের পর বাবা তাকে কুরআনের হাফেজ বানানোর জন্য ইচ্ছা পোষন করেন। তাছাড়া হাফেজ হওয়ার জন্য ছোট বেলা থেকেই তার ও ইচ্ছা ছিল প্রবল। মাত্র ১২ বছর বয়সে তার বাবা প্রথমে পৌর শহরের দেবগ্রাম পশ্চিম পাড়া আলতাফিয়া হাফিজিয়া মাদরাসায় তাকে ভর্তি করান। অল্প সময়ের মধ্যেই সে নাজেরা সহিহশুদ্ধভাবে শেষ করে পবিত্র কুরআন হিফজ শুরু করেন।

তিনি জানান, হিফজ শুরুর পরই তার ওস্তাদরা তার মাঝে মেধার দ্যুতি দেখতে পান। তার নিরলস প্রচেষ্টা, শিক্ষকের আন্তরিকতা আর সহপাঠীদের সহযোগিতায় দীর্ঘ ৫ বছর নিষ্ঠার সঙ্গে পড়াশুনা করায় তিনি পবিত্র কুরআন মুখস্থ করে তার লক্ষ্যে পৌঁছে। আমি চোখে দেখতে না পাড়ায় মাদরাসার ওস্তাদ পবিত্র কুরআনের একটি লাইন বলে দিতেন আমি তা মুখস্থ করতাম। মুখস্থ শেষে হুজুরের কাছে বললে নতুন করে পরবর্তী আরেকটি আয়াত বলতেন আমি তা মুখস্থ করতাম। এভাবেই আমি আল্লাহর মেহেরবানিতে রাত দিন পরিশ্রক করে ত্রিশ পারা কুরআন মুখস্থ করি।

তিনি আরও জানান, এ কাজে তার সহপাঠীরা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। হিফজ শেষ করার পর দেবগ্রাম মাজহারুল হক দারুল উলুম মাদরাসায় কিতাব বিভাগে ভর্তি হন। বর্তমানে জালালাইন শরীফ পড়ছেন। পর্যায়ক্রমে মেশকাত, দাউরায়ে হাদিসসহ অন্যন্য বিভাগ শেষ করে সব ঠিক থাকলে সে একজন দক্ষ আলেম হয়ে কুরআন ও হাদিসের আলোকে জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। পাশাপাশি মানুষের কল্যাণে দ্বীনের খেদমত করার আশা করছেন।

আরো পড়ুন