ট্রাউজার উঠিয়ে মাশরাফিকে পায়ের সেই স্থানটি দেখালেন মার্টিনেজ

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজের সঙ্গে দেখা করতে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ফান্ডেড নেক্সট ভেঞ্চার কার্যালয়ে ছুটে আসেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

মাশরাফি আর্জেন্টিনার ভক্ত তা জানে না কে! ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে শিরোপার অপেক্ষা দূর হয়েছিল। অপেক্ষা দূর হয়েছিল মাশরাফির। তাইতো প্রিয় দলের প্রিয় গোলরক্ষককে একনজর দেখতে, আড্ডা দিতে গল্প করতে ছুটে যান মাশরাফি।

অবশ্য মার্টিনেজকে বাংলাদেশে আনার স্পন্সর করা প্রতিষ্ঠান ফান্ডেড নেক্সট ভেঞ্চারের আমন্ত্রিত অথিতি হয়েই মার্টিনেজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন টাইগারদের সাবেক সফল অধিনায়ক। এসময় তারা প্রায় আধাঘণ্টার মতো আড্ডা দেন। এসময় মার্টিনেজের সঙ্গে সেলফি তুলে মাশরাফি কন্যা হুমায়ারা মর্তুজা। অটোগ্রাফ নিতে দেখা যায় পুত্র সাহেল মর্তুর্জাকে।

মাশরাফি-মার্টিনেজের আড্ডা-কথোপকথনের বিষয়টি নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে শেয়ার করেন সাবেক এই টাইগার কাপ্তান। যেখানে দুই জনের আলাপচারিতার পাশাপাশি মজার একটি তথ্যও শেয়ার করেন মাশরাফি।

মাশরাফি জানান মার্টিনেজ কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের র‍্যান্ডাল কোলো মুয়ানির শর্টটি বাম পায়ের যে স্থানটি দিয়ে ঠেকালেন সেই স্থানটি ট্রাউজার উঠিয়ে মাশরাফিকে দেখান। মাশরাফির তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‌‘আজকে সে ইন্টারভিউয়ের মাঝেই একবার ট্রাউজার উঠিয়ে দেখাল, পায়ের ঠিক সেই জায়গায় একটি ট্যাটু করিয়েছে, বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ বাঁশির ১৮ সেকেন্ড আগে কোলো মুয়ানির শটটি আটকিয়ে দিয়েছিল যে জায়গা দিয়ে। এক সেকেন্ডের জন্য মনে হলো, আসলে বিশ্বকাপটাতো ওখানেই জিতে নিয়েছে।’

মার্টিনেজের সঙ্গে দেখা করার পর বিমুগ্ধ হয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া ফেসবুকে লিখেছেন মাশরাফি, ‘এমিকে ভালো লাগার শুরু কোপা আমেরিকা থেকেই, যেখানে সে টাইব্রেকারে দুটি গোল আটকে দিয়ে দলকে জয় এনে দিল। কত বছর পর বড় কোনো শিরোপা জিতল আর্জেন্টিনা! লিওনেল মেসিও পেল দেশের হয়ে প্রথম বড় ট্রফির স্বাদ। স্বাভাবিকভাবেই পাখির চোখে তাকিয়ে ছিলাম বিশ্বকাপের দিকে। কিন্তু সৌদি আরবের সাথে হেরে মনে হয়েছিল, আরেকটি বিশ্বকাপও হয়তো শেষ হবে হতাশায়। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ানো এবং পরে বিশ্বকাপ জয় দেখতে পারাটা ছিল অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের মতো।’

মাশরাফি আরও লেখেন, ‌‘সেই জয়ের অন্যতম নায়ক এমির সঙ্গে দেখা হলো আমাদের এই ঢাকায়। খুব অল্প সময়ের জন্য দেখা, কিন্তু দারুণ এক অনুভূতি। বিশ্বকাপ জয়ী দলের গোলকিপার চোখের সামনে! সে তো জানে না, আমার এবং আমার মতো আরও কত কোটি মানুষের কত বছরের অপেক্ষা শেষ হলো, যেদিন তার ঐ হাত ধরেই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয় করলো!’

‘আজকে আসলে বেশি ভালো লাগছে আমার সন্তানদের জন্য। যখন বললাম, ‘এমি আসছে, তোমাদের কি দেখা করার ইচ্ছা আছে?’ ওরা লাফাচ্ছিল। সবশেষ দুটি দিন ওরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারছিল না এমিকে দেখবে বলে। আজকে এমির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বললাম, ‘বাচ্চারা তোমার অটোগ্রাফ নিতে চায়।’ সে এত আন্তরিকতা দেখাল, এক কথায় অসাধারণ। এমনকি সে ছবিও তুলে দিল ওদের সঙ্গে। এখন তারা মহাখুশি, আর ওদের খুশিতে আমিও এখন মহাখুশি।’ যুক্ত করেন টাইগারদের সাবেক এই কাপ্তান।

বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ মঞ্চে লড়বে। সেদিন দেশের পতাকা নিয়ে মিছিল করবেন মাশরাফি। তার কথায়, ‘এমি, আপনাকে স্বাগত এই বাংলার মাটিতে। এখানে আপনাদের অগণিত ভক্ত আছে, যুগ যুগ ধরে। আশা করি, আপনারও ভালো লাগছে এই মাটিতে পা রেখে। পাশাপাশি এটাও ভাবি, সত্যি বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ ফুটবলে কোয়ালিফাই করবে আর আমরা আমাদের পতাকা নিয়ে মিছিল করব, ইনশাল্লাহ। অনেকের কাছে এখন এটা অবাস্তব মনে হতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, কাজটা কঠিন, খুব কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। স্বপ্ন পূরণের সেই দিনটির অপেক্ষায় আছি, ইনশাল্লাহ।’

আরো পড়ুন