এডিসি হারুন জামায়াত-বিএনপি পরিবারের ছেলে, অভিযোগ রাব্বানীর
ছাত্রলীগের দুই নেতাকে থানায় নিয়ে বেধড়ক পিটুনির ঘটনায় অভিযুক্ত রমনা বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের পরিবার বিএনপি-জামায়াত সমর্থক বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। তার দাবি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন হারুন।
রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এডিসি হারুনকে নিয়ে একটি পোস্ট দেন রাব্বানী। এতে তিনি দাবি করেন, হারুনের বাবা-মা জামায়াত সমর্থক। পোস্টে এডিসি হারুনের পরিচয় ও গ্রামের বাড়ির উল্লেখ করে গোলাম বাব্বানী বলেন, হারুন সাহেবের পিতা মাড়িয়ালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আশাশুনি-এর ইংরেজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জামাল উদ্দিন ও মাতা শেফালী বেগম উভয়ই জামায়াত সমর্থক। নানা মৃত বাবর আলী সানা একজন মুসলিম লীগার ও সক্রিয় জামায়াত নেতা ছিলেন। মামা- হুমায়ুন কবির, ও মিলন বিএনপির সক্রিয় কর্মী। এছাড়া, বাবা ও মায়ের পরিবারের সকল সদস্য বিএনপি-জামায়াত সমর্থক।
রাব্বানীর অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর জিয়া হল ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাকের রুমমেট ছিলেন (কক্ষ নং- ৩১০) এবং তার সাথে সক্রিয়ভাবে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে জিয়া হলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহযোগী হিসেবে ছাত্রলীগ তকমা লাগান।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলেন, তিনি একজন অনুপ্রবেশকারী হিসেবে নিজের আখের গোছানোসহ আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি বিনষ্টে গোপনে কাজ পরিচালনা করছেন বলে স্পষ্ট প্রতীয়মান। জামায়াত-বিএনপি পরিবারে একজন সদস্য ও ছাত্রদল কর্মী কিভাবে ডিএমপির গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়িত হয়ে ছাত্রলীগ নেতাসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালানো, পাশবিক নির্যাতনসহ সরকারকে বিব্রত ও বেকায়দায় ফেলতে ক্রমাগত বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন, তা নিয়ে স্থানীয় ত্যাগী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ-হতাশা বিরাজমান!
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এডিসি হারুন অর রশিদকে এপিবিএনে বদলি করা হয়েছে। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে বদলি করা হয়। এর আগে সকালে রমনা বিভাগ থেকে এডিসি হারুন অর রশিদকে প্রত্যাহার করা হয়।
হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় ধরে নিয়ে বেদম পেটানোর অভিযোগ উঠে। ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা হলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবি শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম।
এর আগে বিভিন্ন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটার আছে হারুন অর রাশীদের বিরুদ্ধে। খবরের শিরোনাম হয়েছেন কখনও শিক্ষকদের পিটিয়ে, আবার কখনও নারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এমনকি নিজ সহকর্মীকেও চড় মেরে সমালোচিত হয়েছিলেন এডিসি হারুন।
শনিবার সন্ধ্যায় বারডেম হাসপাতালে প্রশাসনের এক কর্মকর্তার সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান এডিসি হারুন। সেই বাগ্বিতণ্ডা থামাতে ওই প্রশাসন কর্মকর্তার ডাকে নাঈম হাজির হলে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে অধীনস্থ ১০-১৫ জন পুলিশ সদস্য সঙ্গে নিয়ে পেটান এডিসি হারুন।