কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল
কুমিল্লায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। নির্যাতনের ঘটনার পর থানায় অভিযোগও করেন ওই শিক্ষার্থী। ৪ অক্টোবর ঘটনার পর রবিবার (৮ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।
নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থী চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা (২৪)। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষক ওই শিক্ষার্থীর থাকার মেসের মালিক ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক আবুল হোসেন (৭০), তার স্ত্রী কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের একটি কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ইসমত আরা বেগম (৫৬)।
জিডির কপিতে ওই শিক্ষার্থী লেখেন, ‘আমি ৮ বছর যাবৎ উক্ত বাসার মেসে থেকে লেখাপড়া করি। আমার বাবার অসুস্থতার কারণে গত ৬ সেপ্টেম্বর আমি গ্রামের বাড়ি চলে যাই। পরে ৪ অক্টোবর দুপুরে ম্যাচে এসে দেখি আমার রেখে যাওয়া সকল বই খাতা, চেয়ার টেবিলসহ অন্যান্য ব্যবহার্য সকল আসবাবপত্র রুমের বাইরে। আমার ভাড়া রুমের তালা ভেঙে রুমে থাকা প্রয়োজনীয় বই কাগজপত্র, জামা কাপড়সহ আমার ব্যবহারের গয়না ও নগদ টাকা সরিয়ে ফেলে। বাসার মালিককে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে তা আমি বাসার মালিকের স্ত্রীকে জানাই। সারা বিকাল আমাকে বসিয়ে রেখে রাত ৯টায় দুজনে মিলে আমাকে কিল, ঘুষি, লাথি, থাপ্পড় দিয়ে আহত করে। এ সময় আমার চিৎকারে আশপাশের রুমে থাকা ছাত্রীরা এসে আমাকে উদ্ধার করে। পরে কেউ একজন ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ এসে আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ আমাকে উদ্ধার করে।’
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একজন নারী ওই শিক্ষার্থীকে চুল ধরে টেনে মারধর করছেন। এ সময় ওই শিক্ষার্থী চিৎকার করে কাঁদছেন এবং ঘটনার প্রতিবাদ করছেন। পরে পাশে থাকা শিক্ষার্থীরা ওই নারীকে সরিয়ে নেন।
ওই শিক্ষার্থী সোমবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বলেন, ‘বাড়ির মালিক ও তার স্ত্রী নিয়মিত মেয়েদের ওপর অত্যাচার করেন। কয়েকজন মেয়ে এই ঘটনার পর আমাকে বলেছেন আপু আপনি প্রতিবাদ করেছেন। আমাদের সঙ্গেও এমন হয়। কিন্তু কিচ্ছু করার থাকে না।’
এ সময় ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার বাবা অসুস্থ তাই পরিবার ঘটনাটা বাড়াতে চাচ্ছে না। পরিবারসহ বসে সমস্যার সমাধান করেছি। এ বিষয়ে আমরা আর আগাতে চাই না। ওনারা ক্ষমা চেয়েছেন। বলেছেন, আমার কোনও জিনিসপত্র ধরেনি, তাই ক্ষতিপূরণও দেবেন না। আমার পরিবার বিষয়টা এখানেই ইতি টানতে চাইছেন।’
এ ব্যাপারে জানতে ওই শিক্ষকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোর্শেদ বলেন, ‘ঘটনাটা শুনেছি। বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানা নেই।’