‘বড় প্রতিপক্ষ’ না থাকায় নির্ভার নৌকার তিন প্রার্থী
কুমিল্লার তিনটি সংসদীয় আসনে ‘বড় প্রতিপক্ষ’ না থাকায় নৌকার বিজয় নিয়ে নির্ভার আছেন তিন হেভিয়েট প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। আওয়ামী লীগ মনোনীত তিন প্রার্থী হলেন কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, কুমিল্লা-১০ (সদর দক্ষিণ, নাঙ্গলকোট ও লালমাই) আসনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুল হক।
দলীয় তথ্যমতে, কুমিল্লা-১০ আসনের নৌকার প্রার্থী আ হ ম মুস্তফা কামাল কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৬ সালে এ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার এ আসনে জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ কংগ্রেস থেকে দুই প্রার্থী রয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা বলেন, বিএনপি ভোটের মাঠে থাকলে হয়তো নির্বাচনে প্রতিযোগিতা হতো, এখন যারা প্রার্থী হিসেবে আছেন তাদের প্রতিপক্ষ প্রার্থী হিসেবে নেওয়ার কোনো কারণ নেই। তাই এবারের নির্বাচনেও নিশ্চিত বিজয়ের পথে আছেন নৌকার প্রার্থী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই সদর দক্ষিণ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম সারওয়ার। তাঁর ভাষ্য, তাঁর ভাইয়ের (অর্থমন্ত্রী) মাধ্যমে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বেশ কিছু মেগা প্রকল্প চলমান। তাই জনগণের ভোটে আবারও নির্বাচিত হবেন তাঁর ভাই।
কুমিল্লা-৯ আসনের নৌকার প্রার্থী তাজুল ইসলাম। এ আসন থেকে ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদে আছেন তিনি।
দলীয় তথ্যমতে, কুমিল্লা-৯ আসনে জাতীয় পার্টি, তরীকত ফেডারেশন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশসহ ছয় প্রার্থী রয়েছেন। তবে ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো শক্তিশালী কোনো প্রার্থী নেই। দলের নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তাজুল ইসলামের মাধ্যমে এলাকার যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। তাই ভোটের মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো কোনো প্রার্থী না থাকায় তিনিও নিশ্চিত বিজয়ের পথে।
লাকসাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুছ ভূঁইয়া বলেন, ‘এলাকার মানুষ উন্নয়ন চায়। এ আসনে আমার নেতার (তাজুল ইসলাম) মাধ্যমে যেসব উন্নয়ন কাজ হয়েছে তা গত একশ বছরেও হয়নি। সরকারের এ মেয়াদে অনেক বড় বড় প্রকল্প এ আসনে সম্পন্ন হয়েছে। তাই এ আসনে পঞ্চমবারের মতো ভোটাররা নৌকাকে বিজয়ী করবে।’
কুমিল্লা-১১ আসনের নৌকার প্রার্থী মুজিবুল হক কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯৮ এবং ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রেলপথমন্ত্রী হন।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, কুমিল্লা-১১ আসনে শক্তিশালী কোনো প্রার্থী না থাকায় চার বারের সংসদ সদস্য মুজিবুল হক ও তাঁর কর্মী-সমর্থকরা রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। এ আসনে স্বতন্ত্র, জাপা, জাকের পার্টিসহ পাঁচ প্রার্থী থাকলেও ভোটের মাঠে কেউই শক্ত প্রতিপক্ষ নয়।
মুজিবুল হক বলেন, ‘উন্নয়নের কারণে এলাকার লোকজন নৌকা ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকে ভোট দেবে না। ভোটের দিন স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করবেন ভোটাররা।’