গাজায় খাদ্য, পানি ও ওষুধের ঘাটতির পর এবার কাফনের কাপড়ের সংকট

ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত স্ত্রীর সাদা কাফনের ওপর স্বামী লিখেছেন, ‘আমার জীবন, আমার চোখ, আমার আত্মা।’ তার শোকাহত ছেলে মায়ের কাফনের কাপড়ে লিখেছে, ‘আমার মা এবং সবকিছু।’ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় পশ্চিমা সমর্থিত ইসরায়েলের চালানো গণহত্যায় নিহত ২১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির মধ্যে একজন ছিলেন ওই নারী।

গত ১২ সপ্তাহে সাদা কাপড়ের টুকরাগুলো ইসরায়েলের হামলায় বেসামরিকদের মৃত্যুর প্রতীক হয়ে উঠেছে। অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে খাদ্য, পানি ও ওষুধের যখন তীব্র সংকট চলছে, তখন মৃত ফিলিস্তিনিদের মোড়ানোর জন্য ব্যবহৃত সাদা কাফনের সরবরাহ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। প্রতিদিনই নিহত শত শত ফিলিস্তিনিকে দাফন করছেন স্বজনরা।

সব কাফন প্রেমময় শব্দ বহন করে না। কারণ, নিহতদের মধ্যে অনেককে তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এই ধরনের ক্ষেত্রে কাফনগুলোতে ‘অজ্ঞাতনামা পুরুষ’ বা অজ্ঞাতনামা নারী’ লেখা হচ্ছে। কবর দেওয়ার আগে এই মৃতদেহগুলোর ছবি তুলে রাখা হচ্ছে এবং হামলার তারিখ ও স্থান নথিভুক্ত করা হচ্ছে যাতে আত্মীয়রা পরে তাদের শনাক্ত করতে পারে।

সংঘাতের তীব্রতা এভাবে বাড়তে থাকলেও আরব সরকার এবং দাতব্য সংস্থাগুলোর কল্যাণে কাফনের কাপড়ের সরবরাহ চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে চলবে বলে আশা করা হয়েছিলো। কিন্তু মৃতের সংখ্যা ভয়াবহ হারে বেড়ে যাওয়ায় হঠাৎ করেই কাফনের কাপড় প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে সংকট দেখা দেয়।

আবু ইউসুফ আল নাজ্জার হাসপাতালের পরিচালক মারওয়ান আল-হামস বলেন, ‘আপনারা জানেন, গাজা উপত্যকায় অবরোধ রয়েছে এবং সেখানে কোনো উপকরণ নেই, তাই আমাদের ছুরি, কাঁচি ও তুলা পেতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এত বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে যে কখনও কখনও দান করা কাফন যথেষ্ট হয় না। কখনো কখনো পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে এক কাফনে মুড়ে দিতে হয়।’

তিনি আরো বলেন, কাফনের কাপড়ের স্বল্পতা দেখেই গাজার পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ তা ধারণা করা যায়।

দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহর একটি হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, ‘আরব দাতাদের কাছ থেকে কাফনগুলো সাবান, সুগন্ধি, তুলা এবং ইউক্যালিপটাস দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় আসে।’

আরো পড়ুন