কুমিল্লায় ৪ দিন ধরে ঘরে পড়ে ছিল স্বামী-স্ত্রীর লাশ
কুমিল্লার চান্দিনায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী। চার দিন পর পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া পচা গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ দরজা ভেঙে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে।
শুক্রবার রাত ৯টায় চান্দিনা পৌরসভার রারিরচর গ্রামের আনিছ মোহাম্মদের বাড়ির এলাকার স্বপ্না বেগমের বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় একটি ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন— চান্দিনার ছায়কোট গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে রোজিনা আক্তার (২২) ও কুমিল্লা আদর্শ সদর এলাকার কাপ্তানবাজার এলাকার মুজিবুর রহমানের ছেলে সোহেল (২৮)। রোজিনা আক্তার একটি পার্লারে কাজ করলেও সোহেল কোনো নির্দিষ্ট কাজ করতেন না।
একই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন জানান, আমি ওই ভবনের তৃতীয় তলায় থাকি। গতকাল থেকে দ্বিতীয় তলায় পচা গন্ধ পাই। প্রথমে ভেবেছি হয়তো ময়লার গন্ধ। আজ জুমার নামাজের পরও একইভাবে গন্ধ পেয়ে দরজা ধাক্কা দিই। কিন্তু কারও কোনো সাড়াশব্দ নেই। পরে তাদের ফোন নম্বরে ফোন করলেও কেউ ফোন রিসিভ করেনি। সন্ধ্যার পর থেকে তাদের আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ কিছু বলতে পারেনি। অবশেষে থানায় খবর দিই। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে দুই মরদেহ দেখতে পান। প্রথম কক্ষে স্বামী ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে, আর ভেতরের কক্ষের বিছানায় স্ত্রীর মরদেহ পড়ে আছে। আর দুটি মরদেহ ফুলে পচে আছে।
নিহত রোজিনার ভাই শাহজাহান বলেন, সোহেল মাদকাসক্ত ছিল। প্রায়ই রোজিনাকে মারধর করত। ১০-১৫ দিন আগেও মাদকের টাকার জন্য রোজিনাকে মারধর করায় রোজিনা আমাদের বাড়িতে চলে যায়। আবার তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে আনে।
নিহত সোহেলের বোন মুন্নী আক্তার বলেন, দুই বছর আগে তারা ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। তাদের কোনো সন্তান নেই। সোহেল গত ১৯ তারিখে আমার বাসায় গিয়েছিল। তার পর থেকে তাকে ফোনেও আর পাইনি। তার স্ত্রীর ফোনেও কল দিয়েছিলাম সেও রিসিভ করেনি। আজ সন্ধ্যার পর বাসার মালিক ফোন করার পর আমি ঘটনাস্থলে আসি এবং এ ঘটনা দেখি।
চান্দিনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মীর রেজাউল ইসলাম জানান, ধারণা করা হচ্ছে— স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অমিল থাকায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে স্বামী সোহেল। মরদেহের অবস্থা দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি ৩-৪ দিন আগে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।