দোয়া করিও, বেঁচে ফিরলে দেখা হবে- জিম্মি জাহাজ থেকে নাবিক

ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়েছে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে শিল্পগ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। এরপর এদিন বিকেলে জাহাজটি সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে জাহাজটি ছিনতাই হওয়ার পরেই নাবিকরা তাদের পরিবারের কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে একাধিক ক্ষুদে বার্তা পাঠান। যেখানে তারা দস্যুর কবলে পড়ার খবর দিয়ে দোয়া কামনা করেন।

এর মধ্যে একজন পরিবারের কাছে পাঠানো মেসেঞ্জারে বার্তায় লিখেছেন, ‘আমাদের জন্য দোয়া করিও। সোমালিয়ার জলদস্যুরা অ্যাটাক করেছে। অলরেডি আমরা অ্যারেস্টেড। আমাদের এক জায়গায় বন্দি করে রাখছে। মনে হচ্ছে নিয়ে যাবে। ওরা বোট উঠিয় ফেলছে অলরেডি। যদি কোনো দিন বেঁচে আসি দেখা হবে, ইনশাআল্লাহ।’

জাহাজের মালিক কেএসআরএম গ্রুপের কর্মকর্তারা বলেন, জাহাজে থাকা নাবিকরা ভালো আছেন। তাদের উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।

এদিকে জাহাজের ভিডিও বানিয়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া মারুফ নামের একজন নাবিক বলেন, অন্তত ৫০ জন জলদস্যু এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকদের জিম্মি করে। তার ভাষ্য সোমালিয়ানরা হয়ত মুক্তিপণের জন্য এটি করেছে। সাধারণত মুসলিম নাবিকদের সোমালিয়ান দস্যুরা বেশি ক্ষতি করে না।

এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিম বলেন, জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে। নাবিকরা নিরাপদে আছেন। সব ধরনের প্রোটোকল অনুসরণ করে নাবিকদের উদ্ধারে কাজ করছি।

জাহাজের অবস্থান শনাক্তকারী ওয়েবসাইট মেরিন ট্রাফিকের তথ্য অনুযায়ী, ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩২ দশমিক ২৬ মিটার প্রস্থের জাহাজটি বাল্ক কেরিয়ার। এটি আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ছেড়ে আসে। ১৯ মার্চ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।

এর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা।

আরো পড়ুন