বাবাকে প্রাণে বাঁচাতে নিজের লিভার দিলেন ছেলে

ছেলের দেওয়া লিভারে প্রাণ ফিরে পেলেন লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত বাবা মো. বেলাল হোসেন। তিনি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং শ্রীপুর—চরপিপলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। প্রায় আড়াই বছর ধরে লিভারের ওই জটিল রোগে ভুগছিলেন তিনি।

জানা যায়— রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে বেলাল হোসেনকে লিভার প্রতিস্থাপন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন ভারতের চেন্নাইয়ের চিকিৎসকরা। লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য দাতা খুঁজে পাওয়া কঠিন ও কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়। তার এই দুঃসময়ে ঢাল হয়ে দাঁড়ায় তার ছেলে জাকির হাসান। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাবাকে প্রাণে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। জাকির রুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে ওয়ালটনে উচ্চ বেতনে চাকরি করেন। সামনে তার আরো উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। কিন্তু সব আশা আকাঙ্ক্ষা পিছনে ফেলে বাবার জীবন রক্ষায় নিজের জীবনের দুষ্প্রাপ্য অঙ্গ লিভারের উল্লেখযোগ্য অংশ বাবাকে দেন।

সম্প্রতি ভারতের চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে বাবা ও ছেলের সফলভাবে অপারেশন সম্পন্ন হয়। তারা এখন ঝুঁকিমুক্ত। পরিবারের জন্য বাবারা সবসময়ই সুপার হিরো। কিন্তু সন্তানরাও পরিবার ও সমাজের কাছে কখনো কখনো হিরো হয়ে ওঠে। তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ জাকির হাসান। মানুষের লিভার সাধারণত ১০—১২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ৩—৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লিভার রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করলে কারো কোনো ক্ষতি হয় না, বরং উভয়ের লিভার স্বাভাবিক পর্যায়ে বৃদ্ধি পায়।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় খুবজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম দোলন বলেন— হাসান প্রমাণ করলেন সদিচ্ছা ও ভালোবাসা থাকলে জন্মদাতা পিতার জন্য ছেলেরা অনেক কিছু করতে পারে। সমাজে পিতার জন্য জাকির হাসানের এই অবদান সত্যিই বিরল।

আরো পড়ুন