১৮ বছর ধরে খতমে তারাবি পড়াচ্ছেন ছাত্রলীগের সভাপতি, কোনো হাদিয়া ছাড়া
স্থানীয় ছাত্রলীগের সভাপতি তিনি। একইসঙ্গে আবার মসজিদের ইমামও। প্রায় ১৮ বছর ধরে কক্সবাজারের টেকনাফে বিভিন্ন মসজিদে খতম তারাবি পড়াচ্ছেন তিনি। নাম তার হাফেজ নুর কামাল।
শুরুর দিকে একইসঙ্গে রাজনীতি এবং মসজিদে ইমামতি নিয়ে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়লেও দমে যাননি তিনি। গত দেড় যুগ ধরে তার এমন কাজে স্থানীয়রা তো খুশিই, খুশি দলীয় নেতাকর্মীরাও।
নুর কামাল ২০০৪ সালে হাফেজি শেষ করার তিন বছর পর ২০০৭ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৯ সাল থেকে টেকনাফের হ্নীয়া ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ছাত্র রাজনীতি করার পাশাপাশি দাখিল, আলিম ও ফাজিল শেষ করে বর্তমানে কামিল পড়ছেন। একইসঙ্গে উখিয়ে কলেজে বাংলা বিষয়ে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রও তিনি। পাশাপাশি একটি মাদরাসার পরিচালক এবং আছে ব্যবসা।
তারপরও গত ১৮ বছর ধরে রমজানে নিজেই তারাবি পড়ান নুর কামাল। সেটাও কোনো হাদিয়ার বিনিময় ছাড়া।
এ বিষয়ে নুর কামাল বলেছেন, রাজনীতির পাশাপাশি হালাল রোজগার, হালাল ইনকাম দিয়ে আমার জীবন অতিবাহিত করবো, এটাই আমার মূল উদ্দেশ্য। রাজনীতিবিদরা মাঠে-ময়দানে থাকে, আমি কীভাবে মসজিদে ইমামতি করবো, সেই বিষয় নিয়ে মাঝেমধ্যে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে আমি সেগুলো তোয়াক্কা না করে, আমার মনোভাব এবং আমার ইচ্ছা যেটা, সেটা বাস্তবায়ন করার জন্য নিয়মিত রেখেছি।
গত বছর থেকে স্থানীয় আহমদিয়া দারুল কুরআন মাদ্রাসা মসজিদে খতমে তারাবি পড়াচ্ছেন মুসল্লিদের। তবে এ জন্য তিনি নেন না কোনো পারিশ্রমিক। স্থানীয়রা এ বিষয়ে যারপরনাই মুগ্ধ। তারা বলছিলেন, সুস্পষ্ট, সুরাল সুরে সে আমাদের এখন পর্যন্ত খতম তারাবি পড়াচ্ছেন। যারা হাফেজ আছেন, তাদেরও সে অনেক সহযোগিতা করেন।
নুরের এমন কাজে খুশি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও। বেশ কয়েকজন বলেন, আমাদের ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নুর কামাল, তিনি সব দিক থেকেই ব্যতিক্রম। তিনি ভালো একজন ছাত্রনেতা এবং হাফেজও। রাজনীতি করলে দ্বিনের সঙ্গে বা ইসলামের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায় না, এ ব্যাপারে নুর কামাল ব্যতিক্রমী। ছাত্র রাজনীতি করে, এছাড়া এলাকার কাজ করে।