কুমিল্লার সাবেক এমপি জাহের ও তার ভাতিজার অঢেল সম্পদ
কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাক্ষণপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য আবু জাহের ও তার ভাতিজা আবু তৈয়ব অপি গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী, পুত্রের নামেও রয়েছে অনেক সম্পদ। শেখ হাসিনার পতনের পর তারা গা ঢাকা দিয়েছেন।
আবু জাহের আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঠিকাদারি করে দুর্নীতির মাধ্যমে কামিয়েছেন হাজার কোটি টাকা। কুমিল্লা জেলখানায় ঠিকাদারি কাজ পেয়ে করেছেন ব্যাপক দুর্নীতি। জেলখানার ভেতরে ১০ টাকার ওষুধ ১০০ টাকায় সাপ্লাই দিয়ে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। কুমিল্লা শহরে নিজের নামে ও স্ত্রীর নামে রয়েছে ১০ তলা বাড়ি। যার বর্তমান মূল্য ২০ কোটি টাকা। ছেলের নামে রয়েছে দেড় কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল গাড়ি, স্ত্রীর নামে রয়েছে ১ কোটি টাকার মূল্যে বিলাসবহুল গাড়ি, নিজের নামে ও স্ত্রীর নামে কসবা নয়নপুর রোডে মল্লিকা সিএনজি ও ফিলিং স্টেশন ১২০ শতক জায়গার ওপর গড়ে তুলেছেন, যার আনুমানিক মূল্য ২০০ কোটি টাকা।
প্রথমে এই এমপি রাজনীতি না করলেও আপন বড় ভাই ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জেলার নেতা। তখন কুমিল্লা-৫ আসনের এমপি ছিলেন মরহুম আবদুল মতিন খসরু। যিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। তখনো আবু জাহের রাজনীতি করেননি। আবু তাহের উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন মারা যান। ভাইয়ের মৃত্যুর পর হঠাৎ করে রাজনীতিতে আসেন আবু জাহের। প্রথমে তিনি হন উপজেলা চেয়ারম্যান। পরে আব্দুল মতিন খসরুর মৃত্যুর পর তার জায়গা খালি হয়। তখন তিনি কুমিল্লা-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জাতীয় সংসদ-সদস্য নির্বাচনে কেটলি মার্কা নির্বাচন করে এমপি হন। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় অনিয়ম করে এমপি হন আবু জাহের। আর এসব কিছু হয়েছে ভাতিজা কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু তৈয়ব অপির মাধ্যমে। তার এমপি হওয়ার পেছনে কাজ করেছেন কুমিল্লার সংসদ-সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার। তার বিরুদ্ধে কথা বলতে এলাকায় কেউ সাহস পেত না।
অপির সখ্য ছিল সাবেক রেলপথমন্ত্রী মজিবুল হক এমপি ও সাবেক অর্থমন্ত্রী লোটাস কামালের সঙ্গে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই মন্ত্রীর হাত ধরে আবু তৈয়ব অপি অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। গড়ে তুলেছেন নিজের নামে ও স্ত্রী, ভাইয়ের নামে সম্পদের পাহাড়। কুমিল্লা রয়েছে বাগিচাগাঁও এলাকায় ২০ শতক জায়গার ওপর ১০ তলা বাড়ি। নিজের নামে ও স্ত্রীর নামে বিলাসবহুল গাড়ি। চাচা আবু জাহের এমপি হওয়ার পর নিজে হয়ে যান উপজেলা চেয়ারম্যান।
এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাগিচাগাঁও বাসায় গেলে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাড়ির কেয়ারটেকার বলেন, সরকার পতনের পর থেকে আবু জাহের এমপি মহোদয় ও আবু তৈয়ব অপি আর বাসায় আসেননি। বাসায় তালা রয়েছে। তবে ১০ তলা বাড়ির ভাড়াটিয়া আছেন।