‘হোয়াট ইজ এক দফা’ বলা ছাত্রলীগ নেতা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে কাতার গেলেন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ‘হোয়াট ইজ এক দফা’ বলে এক শিক্ষার্থীর হাত থেকে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহবুদ্দিন বেগ শাপলু। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেলে তিনি ছিলেন লাপাত্তা। তবে গত মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদের সাবেক এ ভাইস চেয়ারম্যান কাতারে পাড়ি জমান বলে জানা গেছে।
প্ল্যাকার্ড ছিঁড়ে ফেলার ভিডিও ক্লিপটি তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারী শিক্ষার্থীর হাত থেকে ‘এক দফা, এক দাবি’ লেখা একটি প্ল্যাকার্ড জোরপূর্বক তার কাছ থেকে টেনে নিয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সামনেই ছিঁড়ে ফেলেন ওই নেতা।
এই ঘটনার পরদিনও আবার দলবল নিয়ে বাধা দিতে গেলে ধাওয়া খান শাহবুদ্দিন বেগ শাপলু। আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বাধা দিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। এ ঘটনার জেরে ৫ আগস্ট তার রাধানগর কলেজপাড়ার বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর থেকেই তিনি লাপাত্তা হন।
বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাপলুর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ২১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ঘুরছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, এক হাতে পাসপোর্ট, আরেক হাতে ব্যাগ টেনে স্ক্যানিং মেশিনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন শাহবুদ্দিন বেগ শাপলু। এরপর তিনি হাত উঁচিয়ে বিদায় জানান। ওই দিনই ফেসবুকে শাহবুদ্দিন বেগ শাপলু লিখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামিনের।’
শাহবুদ্দিন বেগ শাপলু বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের একজন সদস্য ও কাতারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র। শাপলুর পরিবারের ওই সদস্য জানান, শাপলুকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের তিন দিনের মধ্যে কাতার পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত মঙ্গলবার তিনি সে দেশে পৌঁছেছেন।
আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজলের ভাতিজি জামাই হলেন শাহবুদ্দিন বেগ শাপলু। আর তাকজিল খলিফা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ঘনিষ্ঠজন। আত্মীয়তার সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে শাহবুদ্দিন আখাউড়ায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতেন। তার বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, জায়গা দখল, স্থলবন্দরে প্রভাব দেখানোসহ নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে।