ইসকন বিরোধী কথা বলায় চাকরি হারালেন ইমাম
জুম্মার নামাজ শেষে ইসকন বিরোধী কথা বলায় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ বাইতুল হামদ্ জামে মসজিদের ইমাম মিনহাজ আল আদনানকে চাকুরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে।
চাকুরিচ্যুত ইমামের অভিযোগ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুম’আর নামাজে খুতবা শেষে ‘ইসকন’ নিয়ে আলোচনা করায় তাকে চাকরি হারাতে হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মসজিদ কমিটি বলছেন,প্রকাশ্যে কমিটির বিরুদ্ধে বেতন ও অন্যান্য সুযোগ – সুবিধা নিয়ে আলোচনা করায় তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। এনিয়ে ওই ইমাম তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
ইমাম মিনহাজ আল আদনান মাগুরা জেলার সদর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি গত ১ নভেম্বর থেকে সোন্দাহ বাইতুল হামদ্ জামে মসজিদে আট হাজার টাকা বেতনে দাঁয়িত্ব পালন করছিলেন।
রোববার দুপুরে মসজিদ প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখা যায়, ইমাম মিনহাজ আল আদনান মসজিদের সামনে একটি গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছেন। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার জুম’আর নামাজে খুতবায় তাওহীদ, আকিদা ও ইমান নিয়ে আলোচনা চলছিল। একপর্যায়ে দেশের চলমান পরিস্থিতি ও ইসকন নিয়ে আলোচনা হয়। সেদিন তাৎক্ষণিক কেউ কিছু বলেনি। গত শনিবার রাতে মসজিদের সহ সভাপতি আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, হিসাবরক্ষক আবুল হোসেন শমছেরসহ কয়েকজন তাকে বলেন যে, মসজিদে ইসকন ও বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করা যাবে না। এ নিয়ে কিছুটা কথা কাটাকাটি হয়। এরপর রোববার ফজরের নামাজের পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন তাকে মসজিদ কমিটি।
তবে ইমামের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, হিসাব রক্ষক আবুল হোসেন শমছের। তারা বলেন, গত ২২ নভেম্বর ইমাম সাহেব মসজিদে বেতন ও অন্যান্য সুযোগ – সুবিধা নিয়ে প্রকাশ্যে কমিটির বিরুদ্ধে অসৎ বক্তব্য ও আচরণ করেছেন। সে জন্য কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি, গত শুক্রবার মসজিদে ইমাম ইসকন নিয়ে কথা বলেছে। তবে এনিয়ে তাদের কোনো অভিযোগ নেই।
স্থানীয় মুসল্লি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শুক্রবারে হুজুর তাওহীদ, আকিদার পাশাপাশি ইসকন নিয়ে আলোচনা করেছিল। সেজন্য রোববার তাকে মসজিদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ইমাম মসজিদে ইসকন ও বেতন নিয়ে আলোচনা করায় কমিটির সিংহভাগ সদস্যদের সম্মতিতে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁর ভাষ্য, আরো কয়েক মাস ইমামকে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, ইমামের ঘটনাটি তিনি জেনেছেন। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে পরে বিস্তারিত জানাবেন তিনি।