‘শিবির কোপানো জায়েজ’ লেখা সেই ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নিল ছাত্রশিবির

‘শিবির কোপানো জায়েজ ছিল, আছে, থাকবে, ইনশাল্লাহ’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রদল নেতার দেওয়া এমন পোস্টের প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে আইনের আওতায় আনতে থানায় অভিযোগ জানিয়েছে ছাত্রশিবির।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় দুইজন আইনজীবীসহ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নোয়াখালী শহর শাখার আইন সম্পাদক আবদুল কাউয়ুম বাদী হয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন। এ সময় শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও নোয়াখালী শহর শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমানসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযুক্তরা হলেন, নোয়াখালী সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের মো. জালাল আহমেদের ছেলে সোহাগ গাজী ও চর কাউনিয়ার ইউসুফ মাঝির ছেলে আরিয়ান হোসেন বাবলু। অভিযুক্ত দুজনেই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মো. সোহাগ গাজী আন্ডারচর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এবং নোয়াখালী ন্যাশনাল মডেল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে এই নেতা সৌদি আরবে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় ছাত্রদল।
জানা যায়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সোহাগ গাজী নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন, ‘শিবির কোবানো (কোপানো) জায়েজ ছিল, আছে, থাকবে।’ স্ট্যাটাসটি দেওয়ার পরপরই তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। ব্যাপক সমালোচনার মুখে কিছু সময় পর তিনি পোস্টটি মুছে ফেলেন। সোহাগ গাজীর এই বিতর্কিত স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন।
এদিকে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় অভিযোগ প্রদান শেষে শিবিরের নেতারা একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আইন সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার হীন চক্রান্তের অংশ হিসেবে ছাত্রদল নেতা মো. সোহাগ গাজী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘শিবির কোপানো জায়েজ ছিল, আছে, থাকবে, ইনশাল্লাহ’ স্ট্যাটাস দিয়ে রাজনৈতিক বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে। উস্কানি ও রাজনৈতিক বিদ্বেষ ছড়িয়ে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা এ বিষয়ে আইনি প্রতিকার চেয়ে সংগঠনের সিদ্ধান্ত মতে সুধারাম মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
এসময় শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও নোয়াখালী শহর শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান বলেন, আমরা ছাত্রদলের সঙ্গে দীর্ঘ ১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজপথে এক সঙ্গে থেকে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করেছি। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ছাত্রদলের তৃণমূলের কিছু নেতাকর্মীর মনে নতুন করে ফ্যাসিবাদের জন্ম নিচ্ছে। আমরা এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপাশি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আহ্বান থাকবে, যে সকল অতি উৎসাহী নেতাকর্মী এ ধরনের কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
সুধরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, সাইবার সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে নোয়াখালী সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ চৌধুরী বলেন, মো. সোহাগ গাজী আন্ডারচর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে সে সৌদি আরবে অবস্থান করছে। সে আমাকে বলছে যে তার আইডি হ্যাক হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে আমরা সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। কারণ আমার মনে হচ্ছে তার আইডি হ্যাক হয়নি।