“বাংলাদেশিরা ভারতে আসতে চায় না, বরং ভারতীয়রাই দেশ ছাড়ছে”

বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগকে “ভ্রান্ত ধারণা” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখন অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামোসহ বহু সূচকে ভারতের চেয়েও ভালো করছে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশিরা ভারতে আসবে কেন?”
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক সর্বভারতীয় ইংরেজি গণমাধ্যমে ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে অংশ নিয়ে এই মন্তব্য করেন কৃষ্ণনগরের সংসদ সদস্য। সাক্ষাৎকারে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে প্রশ্ন তোলার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মহুয়া এবং পাল্টা প্রশ্ন করেন—“কোথায় সেই ব্যাপক অনুপ্রবেশ? কে আসছে? কেন আসবে?”
তিনি বলেন, “আমি নিজে সীমান্তবর্তী এলাকার এমপি। আমার এলাকা নদিয়ার কৃষ্ণনগর, যার উল্টোদিকে কুষ্টিয়া জেলা। আপনি বলুন তো, এখনকার বাংলাদেশি কেন ভারতে থাকতে চাইবে? মোদিজি আর অমিত শাহজিকে বলুন, এই ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসুন যে সবাই ভারতে আসতে মরিয়া।”
মহুয়া জানান, গত তিন বছরে প্রায় ১১ লাখ ভারতীয় নাগরিক স্থায়ীভাবে বিদেশে চলে গেছেন। কেউ আর ভারতকে স্বপ্নের দেশ বলে ভাবছে না। বরং ভারতীয়রাই এখন ‘গোল্ডেন ভিসা’ পেতে লাখ লাখ টাকা খরচ করে ইউরোপ, দুবাই কিংবা পর্তুগালে পাড়ি জমাচ্ছেন।
সঞ্চালক যখন বলেন, দরিদ্র বাংলাদেশিরা তো এত টাকা খরচ করে বিদেশ যেতে পারবে না, তখন মহুয়া বলেন, “আমি বাংলাদেশিদের কথা বলছি না। আমি বলছি ভারতীয়দের কথা—যারা বিদেশে চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশিরা ভারতে ঢুকতে মরিয়া—এই ভুল ধারণা থেকে বের হন।”
সিএএ প্রসঙ্গ তুলে মহুয়া বলেন, “সরকার বলছে বাংলাদেশি হিন্দুরা নির্যাতিত। তাহলে তারা কেন আজও অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করছে? কেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নাগরিকত্বের আবেদন করছে না? বাস্তবে সিএএ চালু হওয়ার পর মাত্র দুই হাজারের মতো আবেদন এসেছে—এটা কি বলে না পুরো ধারণাটাই ভিত্তিহীন?”
সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে মোদি সরকারকে তীব্রভাবে আক্রমণ করে মহুয়া বলেন, “দুই লাখ কোটি রুপি বরাদ্দ করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সেই টাকা গেল কোথায়? আরও বিএসএফ মোতায়েন করুন, প্রযুক্তি বসান, আলো লাগান—দেখবেন কেউ ঢুকতে পারবে না। একজন ঢুকলেও তার দায় সরকারের।”