জামিন চাইলেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আফ্রিদির বাবার ছবি দেখিয়ে আইনজীবী

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় আসাদুল হক বাবু হত্যার মামলায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীর ছেলে তৌহিদ আফ্রিদির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (২৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক এ আদেশ দেন।

বিকেল ২টা ২৫ মিনিটে আফ্রিদিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয় এবং হাজতখানায় রাখা হয়। পরে বিকেল ৩টা ২৬ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় তাকে এজলাসে তোলা হলে জনাকীর্ণ আদালতে হট্টগোল শুরু হয়। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক খান মো. এরফান তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খায়রুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল ও জামিন চান। তিনি যুক্তি দেন, মামলার ঘটনার সঙ্গে আফ্রিদির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বরং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পুলিশের নির্বিচার গুলিতেই ভিকটিম নিহত হয়েছেন। মামলার বাদীও গত বছর অ্যাফিডেভিট দিয়ে নামটি ভুলক্রমে যুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। এছাড়া আফ্রিদি কিডনি জটিলতায় ভুগছেন এবং তার স্ত্রী গর্ভবতী—মানবিক দিক বিবেচনায় জামিন দেওয়ার আবেদন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবীরা বলেন, আফ্রিদি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তিনি লাইভে এসে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে আন্দোলনকারীদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাতে উৎসাহিত করেছেন। তাকে রিমান্ডে নিলে কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, কারা নির্দেশদাতা, অর্থদাতা ও অস্ত্রদাতা—তা বেরিয়ে আসবে।

শুনানির সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন, আন্দোলনের পক্ষে আফ্রিদির বহু পোস্ট আছে। এরপরও আদালত জামিন নামঞ্জুর করে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুনানি চলাকালে আইনজীবী আদালতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আফ্রিদির বাবা নাসির উদ্দিন সাথীর ছবি প্রদর্শন করে বলেন, আফ্রিদির আলাদা কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই; তার বাবা কেবল ব্যবসায়ী, কোনো দলের পদ-পদবি নেই।

শুনানি শেষে আফ্রিদিকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় তাকে পেটে হাত দিয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়।

এর আগে রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে বরিশাল থেকে আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গত ১৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার হন তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথী।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে নিহত হন আসাদুল হক বাবু। নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন ওই বছরের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এতে নাসির উদ্দিনকে ২২ নম্বর ও তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদিকে ১১ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন