দেবীদ্বারে বোরো ধানের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসি

ডেস্ক রিপোর্টঃ সৌখীনদের পারিশ্রমিক ছাড়াই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফসল কেটে ঘরে তোলায় ভিন্ন আঙ্গীকের ঐতিহ্য এখনো প্রচলন রয়েছে দেবীদ্বারে । দেবীদ্বারে বোরো ধানের ফসলের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। শ্রমিক সংকট নিরসনে কৃষকই নয়, গ্রামের বিভিন্ন পেশার সৌখীন লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে, কোন ধরনের পারিশ্রমিক ছাড়াই কৃষকের ধানী ফসল কেটে ঘরে তোলার এক মহা উৎসব আমাদের দেশে প্রচলিত আছে। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এ সংস্কৃতি গ্রাম-বাংলার একটি ঐতিহ্য বহন করে আসছে। ধানী ফসল কেটে ঘরে তোলায় ভিন্ন আঙ্গীকের এ ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। তারই অংশ হিসেবে দেবীদ্বার পৌর এলাকার চাপানগর গ্রামে এ বৈরী আহাওয়ায় শ্রমিক সংকট নিরসনে প্রায় ৫০ জন বিভিন্ন পেশার লোক কৃষক বেশে ধান কাটার মধ্য দিয়ে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে পুনর্জাগরিত করে উৎসবে মেতে উঠেন।

শুক্রবার সকালে চাপানগর গ্রামের কৃষক জনু মিয়ার ২০শতাংশ জমির বোরো ধান কেটে ওই উৎসব পালন করেছে। এসময় গান, শ্লোগান, সূর-চিৎকারে পুরো গ্রাম জুড়ে এক আনন্দঘন পরিবেশে সৃষ্টি হয়। গ্রামের নারী-পুরুষ-শিশু সহ নানা বয়সী লোকজন ওই ধানকাটার আনন্দ উপভোগ করেন। ধান কাটায় অংশ নেন, সরকারী- বেসরকারী কর্মকর্তা- কর্মচারী, ব্যবসায়ি, কৃষক-ক্ষেত মজুর, ছাত্র-যুবক সহ নানা বয়সী ৫০ জন কৃষক। ধান কাটা শেষে কৃষক জনু মিয়ার বাড়িতে সকলে মিলে এক ভোজ সভায় মিলিত হন। খাদ্য তালিকায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা পর্ষদ’র সমাহার ছিল।

 

কৃষি সম্প্রসারনে অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী আমন ফসলের পর এখন বোরো ধানের ফসলেরও বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়নে ১১ হাজার ৪শত হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। এতে লখ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বলেও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০% ফসল কৃষক ঘরে তুললেও বৈরী আবহাওয়া এবং ঝর-বৃষ্টির কারনে ধানের গোছা হেলে পড়ায় কৃষক কিছুটা বিপাকে পড়েছেন। ঝর-বৃষ্টির হাত থেকে ফসল ঘরে তোলায় সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ায় শ্রমিক সংকটও দেখা দিয়েছে।

দেবীদ্বার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কবিরাজ জানান, চলতি মৌসুমে দেবীদ্বারে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। লখ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। চলতি মওসুমে উক্ত উপজেলায় ১১ হাজার ৪শত হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০% ফসল কৃষক ঘরে তুলেছেন। বৈরী আবহাওয়া এবং ঝর-বৃষ্টির কারনে ধানের গোছা হেলে পড়ায় কৃষক কিছুটা বিপাকে পড়েছেন। ঝর-বৃষ্টির হাত থেকে ফসল ঘরে তোলায় সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ায় শ্রমিক সংকটও দেখা দিয়েছে। দু’চারদিন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাকী ৫০% ফসল অক্ষত অবস্থায় কৃষক ঘরে তুলতে পারবেন।

আরো পড়ুন