কুমিল্লার মেঘনায় হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে বালু উত্তোলন

দাউদকান্দি থেকে নৌপথে প্রায় ১ ঘন্টার ব্যবধানে পৌঁছে গেলাম মেঘনার চালিভাঙা ইউনিয়নে। ফসলি বিঘাবিঘা জমি কেটে চলছে অবৈধ বালু মহাল উৎসব। একেই বলে কারো পৌষমাস, কারো সর্বনাশ!

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার চালিভাঙা ইউনিয়নের ভূমি দস্যুদের অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রভাবে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে কয়েক হাজার বিঘা জমি ও শতাধিক মানুষের বসতভিটা। এলাকারবাসির পক্ষ থেকে বালু উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান এর সত্ত্বাধিকারী নরুল আমিনের নার্গিস ট্রেড্রাস নামের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে, যার স্বারক নম্বর ৭২৫০/২০২০। এর প্রেক্ষিতে গত ২৫ অক্টোবর হাইকোর্টে ১ নং সাপমারা, চরের গাও ও ৬ নং সেনের চর মৌজার অভ্যন্তরে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে একটি নিষেধাজ্ঞা আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা, এই কোর্টের আদেশ অমান্য করে রাতের আঁধারে প্রভাবশালী মহল বালু উত্তোলন করেই চলছে।

ভূমিহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে কয়েক শতাধিক পরিবার। অনিশ্চিত উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় জীবন পারছে এসব ভুক্তভোগী পরিবার।
তাদের চোখের জল আর গগন বিদারী কান্নায় মেঘনার আকাশ বাতাস ভারি হচ্ছে! স্থানীয় প্রশাসনও নির্বিকার। বালু খেকোদের তাণ্ডবে ভূমি হারিয়ে, বসত ভিটা হারিয়ে কোথায় মাথা গুছবে এ চিন্তায় দিশেহারা নি:স্ব পরিবারগুলো।

মহামান্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, ভূমি দস্যুরা রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করছে দেদারছে। কোথায় সেই অদৃশ্য খুঁটির জোর? পর্দার আড়ালে কারা এর কলকাঠি নেড়ে মদত দিচ্ছে?

সরেজমিনে চালিভাঙা গিয়ে জানা যায়,কারা এ বালু মহালে জড়িত।নাজায়েজ কাজকে বৈধ্য করতে কোথায় যায় এ টাকার ভাগভাটোয়ারা। এই বালু মহাল দেখে মনে হলো এ যেনো এক সোনার খনি। চালিভাঙার হোসেন নামের এক যুবক জানান, ৩০ টি ড্রেজারে দৈনিক ৩০০ ব্লাকহেট বোঝাই করলেই ব্লাকহেট প্রতি দিতে হয় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা।নগদ টাকার পাহাড়ের ছড়াছড়ি। এসব টাকার নিয়মিত মাসোয়ারা যায় উপর-নিচের বিভিন্ন মহলে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রবীর কুমার রায় এ বিষয়ে বলেন, “আমার কাছে এখনো অফিসিয়ালি হাইকোর্টের কোনো আদেশ আসে নি তাই এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না।”

আরো পড়ুন