লাকসামে সড়কে ময়লার ভাগাড় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে এলাকাবাসী

লাকসাম প্রতিনিধিঃ কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে লাকসামের ছিলনিয়া নামকস্থানে ফেলা হচ্ছে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা। বৃষ্টির সময় আবর্জনার পঁচে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পথচারীদের ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে পরিবেশ দূষনের সাথে সাথে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে জনসাধারন। বাজারের মাছ, মুরগী পঁচা নাড়ী-ভুড়ি, পঁচা সবজি, বাসা-বাড়ীর সব ধরনের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এখানে। লাকসাম পৌরসভা প্রবেশ মুখে ফেলা আবর্জনার বিষাক্ত বর্জ্য গিয়ে মিশছে কৃষি জমি ও খালগুলোতে, এতে প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ মরে গেছে, নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমির ফসল ও বাড়ছে পানিবাহিত রোগ। ময়লা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় কারনে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাটিয়াভিটা আহমদিয়া ইসলামীয়া মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মাও. সফিকুল ইসলাম জানায়, পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা সড়কের পাশে ফেলার কারনে দূর্গন্ধে প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী ও বেশ কয়েকজন শিক্ষক ইতোমধ্যে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। পৌর মেয়র অচিরেই যদি এ সমস্যা সমাধান না করেন তাহলে এ এলাকার বসবাসকারীদের বিভিন্ন রোগ-জীবানু আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে আমরা এ অবস্থা থেকে অতিদ্রুত প্রতিকার চাই।

ভুক্তভোগী বাটিয়াভিটা গ্রামের শিক্ষক মোঃ শাহজাহান বলেন, বাজারের মুরগীর নাড়ীভুড়ি ও বাসা-বাড়ীর ময়লা আবর্জনা ফেলার কারনে উত্তরের বাতাসে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে বসত বাড়ীতে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। যাতায়াতের সময় আমরা নাকে-মুখে কাপড় দিয়ে চলাপেরা করতে হয়। এ অবস্থা থেকে প্রতিকারে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি।

সিএনজি, রিক্সাচালক মহসিন ও আবুল কাশেম জানান প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে যাত্রীদের নিয়ে যাতায়াত করি, দূর থেকে দুর্গন্ধে ময়লার কাছাকাছি আসতে পারি না অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ীতে বসাকালে নাকে রুমাল বা টিসু দিয়ে আসতে হয়। যাত্রীরা বলেন এ পথ দিয়ে আসলে মনে হয় পেটের নাড়িভুরি নড়েচড়ে উঠে অনেকের বমি ও মাথাব্যাথা শুরু করে।

এ দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিচ্ছন্নকর্মী বলেন, গত কয়েক দিন ধরে ময়লা ফেলছি পৌরসভার সুপারভাইজারের নির্দেশে। ৩/৪ দিন আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে ময়লা ফেলা নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে তখন আমি সুপারভাইজারকে জানাই। তিনি বলেন তোমার কাজ তুমি কর সেটা আমরা দেখবো।
লাকসাম পৌর মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আবদুছ সামাদ ফকির বলেন, আগে মেয়রের সাথে কথা বলেন তারপর আমি বক্তব্য দিব।

পৌর পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা জালাল আহমেদ জানায়, ড্যাম্পিং ব্যবস্থা না থাকায় আপাতত ময়লা অপসারণ সম্ভব হচ্ছে না। ময়লা গার্ভেস প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এ সমস্যার সমাধান হবে।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের এর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল হক বলেন, ময়লা ফেলার বিষয়টি মেয়রকে একাধিকবার বলা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেলে পরিবেশ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো পড়ুন