মনোহরগঞ্জ থানার সেই ওসি ক্লোজড

ডেস্ক রিপোর্টঃ ঘুষ ও গ্রেফতার বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানায় ওসি মো.আনোয়ার হোসেনকে অবশেষে ক্লোজড করা হয়েছে। এতে স্বস্তি ফিরে এসেছে এলাকায়। গত প্রায় ৭ মাস আগে মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে যোগদান করেছিলেন তিনি। এরপর ওই থানাকে অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

বুধবার রাতে ওসি আনোয়ার হোসেনকে মনোহরগঞ্জ থানা থেকে ক্লোজড করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ওই রাতেই থানার নতুন ওসি হিসেবে যোগদান করেছেন মো.মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া। তিনি মনোহরগঞ্জে যোগদানের আগে জেলার বুড়িচং থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে মনোহরগঞ্জ থানার ওসি হিসেবে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ পরিদর্শক মো.মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া নিজেই।

সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শুরুতে মনোহরগঞ্জ থানার ওসি হিসেবে যোগদান করেন পুলিশ পরিদর্শক মো.আনোয়ার হোসেন। যোগদানের পর থেকেই ওই থানাকে অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করে অনেকটা প্রকাশেই ঘুষ বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম শুরু করেন তিনি। পরিবহন খাত থেকেও ব্যাপক চাঁদাবাজি করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। এনিয়ে পরিবহন শ্রমিকরা তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ এবং সড়ক অবরোধও করে।

এদিকে, গত বুধবার রাতে ওসি আনোয়ার হোসেনকে মনোহরগঞ্জ থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এমন খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। গত ৭ মাস ধরে তার কাছে হয়রানি হওয়া ভুক্তভোগীরাও এই খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। ওসি আনোয়ারকে মনোহরগগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করায় উপজেলার সাধারণ মানুষ জেলার উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশ না শর্তে মনোহরগঞ্জের একাধিক জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, ভুক্তভোগী ও সাধারণ মানুষ বলেন, মনোহরগঞ্জ থানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এতো খারাপ কোন ওসি আর আসেনি। তার মতো দু’এক জনের কারনে সাধারণ মানুষ আইনের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে। গত সাত মাস ধরে পুরো মনোহরগঞ্জে পুলিশের সেবাকে হয়রানি আর ভোগান্তিতে পরিণত করেছেন তিনি। এক কথায় বলতে গেলে ওসি আনোয়ার মনোহরগঞ্জের বারোটা বাজিয়ে গেছেন। তিনি এই উপজেলার অসংখ্য সাধারণ মানুষকে আটকের পর মোটা অংকের টাকা বাণিজ্য করে ছেড়ে দিয়েছেন। অনেক মাদক কারবারিকেও আটকের পর টাকার বিনিময়ে ছেড়ে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। আর তাদের সঙ্গে ওসি আনোয়ারের ছিলো সখ্যতা।

এদিকে এসব অভিযোগের বিষয় জানতে মনোহরগঞ্জ থানার ওসির পদ থেকে থেকে ক্লোজড হওয়া পুলিশ পরিদর্শক মো.আনোয়ার হোসেনের ব্যক্তিগত মোবাইলেফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.আজিম উল আহসান বলেন, ওই কর্মকর্তার (পুলিশ পরিদর্শক মো.আনোয়ার হোসেন) বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ বা তথ্য-প্রমান পাওয়া যায় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্রঃ pbd

আরো পড়ুন