নৌকার পোস্টার সাঁটাতে গিয়ে আহত আরিফের মৃত্যু
হালিম সৈকতঃ মৃত্যুর স্বাদ সকল প্রাণীকেই গ্রহণ করতে হবে কিন্তু অকাল মৃত্যু কারোই কাম্য নয়। অকালেই ঝরে গেল এসএসসি পরীক্ষার্থী আরিফ হোসেনের প্রাণ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিআইপি সেলিমা আহমাদ মেরীর (নৌকার) পোস্টার লাগাতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে না ফেরার দেশে চলে গেল আরিফ হোসেন।
২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ইং তারিখ কড়িকান্দি ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মামা ছাইদুর রহমানের অনুরোধে কড়িকান্দি বাজারে নৌকার পোস্টার লাগাতে গিয়ে অসাবধানতা বশত বিদ্যুতের শক লেগে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আরিফ। পরে সকলে মিলে তিতাস উপজেলা হাসপাতালে নিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ১ সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে ৩১ ডিসেম্বর রাত ১০টায় জীবন যুদ্ধে হেরে যান এই বালক। পরিবারের উপার্জনক্ষম বলতে কেউ নেই। তার বাবা কবির হোসেন সামান্য রাজমিস্ত্রি। দৈনিক হিসেবে যা পান তা দিয়ে কোন রকমে সংসার চালান। বাবাকে সাহায্য করার জন্য এবং পরিবারের অভাব মোচনের জন্য আরিফও মাঝে মাঝে ক্ষেতে খামারে বদলী হিসেবে কাজ করত। সংসারের অভাব থাকা সত্ত্বেও সে ছিল পড়াশোনার প্রতি অনুরাগী এবং একজন মেধাবী ছাত্র। তার মা রুফিযা বেগম একজন গৃহিনী। তিন ভাই বোনের মধ্যে আরিফ ছিল সবার বড়। আরিফ দাউদকান্দি রায়পুর কে.সি উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। তার আর পরীক্ষা দেয়া হলো না। বড় হয়ে সে একজন ডাক্তার হতে চেয়েছিল। সেই স্বপ্ন স্বপ্ন্ই রয়ে গেল। তার মৃত্যুতে মালিখিল গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া। পরিবারের উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা মা বাবা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কখনো বা সেন্সলেস হয়ে পড়ছেন। গরিব এই পরিবারটি এমনিতেই ছন্নছাড়া তার উপরে ছেলের এই চিকিৎসা খরচ চালিয়ে আরও নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
তিতাস-হোমনার নব নির্বাচিত এমপি সিআইপি সেলিমা আহমাদ মেরী ইতোমধ্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা নগন্য। চিকিৎসা ও মৃত্যু পরবর্তী অন্যান্য খরচসহ প্রায় ৩ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহত আরিফের পিতা কবির হোসেন। পরিবারটি টিকে থাকতে হলে সকলের সাহায্য একান্ত প্রয়োজন। বিশেষ করে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কুমিল্লা-২ আসনের এমপি সেলিমা আহমাদ মেরীর কাছে সহায়তা কামনা করেছেন। ছেলেকে ফিরে না পেলেও কিছু অর্থ সহায়তা পেলে হয়ত পরিবারটি উঠে দাঁড়াতে পারবে । বাকি দুই মেয়েকে নিয়ে যাতে পরিবারটি স্বচ্চলভাবে বাঁচতে পারে এমন একটি ব্যবস্থা করে দেবেন এমনটিই দাবী এলাকাবাসীসহ পরিবারের লোকজনের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার মা এবং সেলিমা আহমাদ মেরীও একজন হৃদয়বান মানুষ তাঁরা চাইলে পরিবারটির দায় নিতে পারেন কিংবা সহায়তার হস্ত প্রসারিত করে পরিবারটিকে বেঁচে থাকার পথ দেখাতে পারেন। মাদার অব হিউম্যানেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেলিমা আহমাদ মেরীর কাছে সহায়তা কামনা করেছেন নিহত আরিফের পরিবার ও শুভাকাংখি আত্মীয়স্বজনসহ এলাকাবাসী।