কুমিল্লায় ওএমএস কার্যক্রমে সাড়া নেই
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুমিল্লায় ওএমএসের ২০ জন ডিলার চাল উত্তোলন করে বিপাকে পড়েছেন। আতপ চালের ক্রেতা না থাকলেও তাদের প্রতিষ্ঠান খুলে বসে থাকতে প্রতিদিনই দেড় থেকে দুইশ’ টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। ডিলাররা সারা দিন সর্বোচ্চ একশ’ কেজি চাল বিক্রি করতে পারছেন অনেকটা অনুরোধ করে। নগরীর ২০টি ডিলারের ঘরে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতাশূন্য বসে আছেন ডিলার আর কর্মচারী। এক ভোক্তা জানান, চালের স্বাদ কম। তরকারি বেশি লাগে। ডিলাররা জানান, প্রতিষ্ঠানে চাল ওজনের জন্য প্রতিদিন ৩শ’ টাকা হাজিরায় একজন শ্রমিক রাখতে হয়। আর সরকার প্রতি কেজি চাল বিক্রিতে মুনাফা দেয় ১ টাকা ৫০ পয়সা। সারা দিন ২শ’ কেজি চাল বিক্রি হলে শ্রমিক খরচ উঠে। কিন্তু সরকারি খাদ্য গোডাউন থেকে ডিলারের ঘরে চাল পৌঁছানো পর্যন্ত পরিবহন, লেবার এবং গোডাউনে কিছু অলিখিত খরচ মিলে ৩শ’ টাকা খরচ হয়। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক দেয়া হচ্ছে আতপ চাল। সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, রানীর বাজার ডিলার পয়েন্টে চাল নিতে আসা রহমান ক্ষুব্ধ কণ্ঠে জানান, আতপ চাল আমরা খেতে অভ্যস্ত না। প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। আতপ চালের পরিবর্তে সিদ্ধ চালের ব্যবস্থা করলে খেটে খাওয়া মানুষ উপকৃত হতো। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২০টি স্পটে ওএমএস এর চাল বিতরন শুরু হলেও ক্রেতাশূণ্যতায় ভোগছেন ডিলাররা। মোটা ভাতের চালের পরিবর্তে আতপ চাল বিক্রির সিদ্ধান্তের ফলে তা চালের দাম কমাতে কোনরূপ ভূমিকা রাখতে পারবে না বলে মনে করেন ডিলাররা। মূলত বাজারে চালের উর্দ্ধগতি রোধে ওএমএসের চালে আকৃষ্ট করতেই খাদ্যঅধিদপ্তর এমন কর্মসূচী চালাচ্ছে। কিন্তু ভাতের চালের/ মোটা চালের পরিবর্তে আতপ চাল বিতরন করায় তাতে আকৃষ্ট নন ক্রেতারা। পিঠা তৈরীর এ চাল মানুষের ভাতের চাহিদার বিকল্প হতে পারেনা এমন মন্তব্য করে ক্ষোভ জানান ক্রেতারা। তবে ভোক্তারা বলেন, আমরা খেয়ে অভ্যস্থ মোটা চাল কিন্তু এখন নিরুপায় হয়ে আতপ চালই নিতে হচ্ছে। আগে ন্যায্যমূল্যে ১৫টাকা কেজি মোটা চাল বিক্রি হলেও এবার দর নির্ধারন করা হয়েছে কেজি প্রতি ৩০টাকা। বিক্রেতা ও ক্রেতাদের অভিযোগ বিক্রিত আতপ চাল মানসম্মত নয়। ডিলার পিন্টু সাহা বলেন, বাজারে চালের দাম অনেক নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই ওএমএসে চাল বিতরন করে বাজারে চালের উর্দ্ধগতি রোধ করা সম্ভব না। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ ফারুক হোসেন জানান, যেহেতু আমদানীকৃত চালের বড় মজুদের সিংহভাগই আতপ চাল। খাদ্য অধিদপ্তরের আদেশক্রমেই আতপ চাল বিতরন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ওএমএস এর চাল বিতরন করা হলে, ভোক্তাদের একটা অংশ স্বল্পমূল্যে চাল ক্রয় করে থাকে যা বাজারে চালের দর নিম্নমুখী করতে ভূমিকা রাখে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে ২৭টি ওয়ার্ডে চাল বিতরন হচ্ছে ২০টি স্থানে। প্রতিদিন ৫০০ কেজি করা হবে এসব ডিলার পয়েন্টে।বাজারে চালের দাম কমাতে ভোক্তাদের কাছে স্বল্পমূল্যের চাল বিতরনের ব্যবস্থা করার দাবি ভোক্তাদের।