কুমিল্লায় প্রতারণা মামলায় দুই সন্তানের মা স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী জেলহাজতে

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লায় ‘গ্রীণ বার্ড কিন্ডার গার্টেন স্কুল’ নামক এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাথে একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার পরকীয়ার ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবসায়ী স্বামীর দায়ের করা মামলায় দুই সন্তানের মা এখন জেলহাজতে। ওই শিক্ষিকা পরকীয়া প্রেমিকের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কোটি টাকার সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার পর স্বামীকে তালাক দেয়ার অভিযোগে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।

এছাড়া অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রাখা দুই সন্তানকে ফিরে পেতে তাদের বাবা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরও একটি মামলা দায়ের করেন। বুধবার বিকালে নগরীর টমছমব্রিজ এলাকার একটি হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব বটগ্রাম এলাকার মৃত আবদুল মজিদ মজুমদারের ছেলে স্ত্রীর প্রতারণার শিকার মো. অদুদ মজুমদার।

সংবাদ সম্মেলনে অদুদ মজুমদার অভিযোগ করে বলেন, ২০০৯ সালের ২ অক্টোবর তিনি সামাজিকভাবে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আমতলী গ্রামের নূরুন নবীর মেয়ে লুৎফুর নাহার লুৎফাকে বিয়ে করেন। ওইসময় লুৎফা কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী ছিল। বিয়ের পর তিনি তার স্ত্রীকে মাস্টার্স পাস করান। তাদের মো. ইফতেখার হোসেন মজুমদার দিহান (৯) ও ইভানা মজুমদার (৬) নামে দুই সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে আমতলী এলাকায় ‘গ্রীণ বার্ড কিন্ডার গার্টেন স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করে স্ত্রীকে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেই এবং আমতলী গ্রামের প্রতিবেশী আবুল কাশেমের ছেলে বিল্লাল হোসেনকে সভাপতি করে উক্ত স্কুলের কার্যক্রম পরিচালনা করি।

এদিকে বৈবাহিক জীবনে সুখের আশায় সদর দক্ষিণ উপজেলার ধুলিয়ারা মৌজায় আমার স্ত্রীর নামে ১০.৫০ শতক জমি, আমতলী এলাকায় ২শতক জায়গা ও ২০ লাখ টাকায় একটি ফ্ল্যাট কিনে দেই। এভাবে স্কুল প্রতিষ্ঠা, জমি রেজিস্ট্রি, আসবাবপত্র ক্রয়, নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার প্রদান ও নানাভাবে আমার স্ত্রীকে স্থাবর-অস্থাবরসহ এক কোটি টাকার সম্পদ প্রদান করি। এরই মধ্যে আমার স্ত্রী স্কুলের সভাপতি বিল্লাল হোসেনের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে এবং বিল্লালের প্ররোচণায় আমার স্ত্রী সম্পদ হাতিয়ে নেয়।

একপর্যায়ে গত ৪ জুলাই আমার স্ত্রী আমাকে তালাকের নোটিশ দেয়। এতে নিরুপায় হয়ে লুৎফুর নাহার লুৎফা ও বিল্লাল হোসেনের বেলাল্লাপনার ছবিসংযুক্ত করে গত ৩ অক্টোবর কুমিল্লার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ১নং আমলী আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করি। ওই মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত পিবিআই কুমিল্লাকে নির্দেশ দেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই কুমিল্লার এসআই ফ.ম শাহজাহান গত ২০ নভেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই মামলায় গত ৫ ডিসেম্বর লুৎফুর নাহার লুৎফা ও বিল্লাল হোসেন আদালতে হাজির হলে আদালত লুৎফুর নাহার লুৎফাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

বর্তমানে সে জেলহাজতে রয়েছে। এদিকে আমার দুই সন্তানকে ফিরে পেতে গত ৫ নভেম্বর কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিল্লাল হোসেনের কবল থেকে আমার দুই শিশু সন্তানকে উদ্ধারের জন্য সার্চওয়ারেন্ট ইস্যু করেন।

এখন আমি আমার দুই সন্তান ও কষ্টার্জিত সম্পদ ফিরে পেতে চাই। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে মো. শাহ আলম, মহিউদ্দিন চৌধুরী টুটুল, শাহীন আলম, ওমর ফারুক চৌধুরী, আশরাফুল আলম চৌধুরীসহ স্থানীয় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন