কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে চলছে ধীরগতিতে সংস্কার কাজ, যাত্রীদের দুর্ভোগ
মো.জাকির হোসেনঃ দেশের অন্যতম ব্যস্ততম কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ময়নামতি সেনানিবাস থেকে দেবিদ্বার উপজেলা পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার এলাকায় চলছে সংস্কার কাজ। কাজের ধীরগতির কারণে প্রতিদিনই এই মহাসড়কে চলাচলরত শত শত যানবাহনের চালকসহ অসংখ্য যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গরেজমিন ঘুরে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ময়নামতি সেনানিবাস এলাকা থেকে দেবিদ্বার উপজেলা সদর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার এলাকায় সংস্কারের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে কাজ শুরু হয় বিগত ডিসেম্বর মাসে। খুব ধীরগতিতে কাজ করার কারণে প্রতিদিনই চালকদের যানবাহন চালনাসহ ধূলাবালির কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে এই মহাসড়কের ময়নামতি সেনানিবাস থেকে ময়নামতি রেশম প্রকল্প পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মান কাজ গত প্রায় দু’মাসেও শেষ হয়নি। একেতো ধীরগতি তারউপর সড়কের ১৭ কিলোমিটার অংশের ময়নামতির হরিণধরা,দেবপুর,রামপুর,কংশনগর,দেবিদ্বারের চরবাকরসহ দেবিদ্বার উপজেলা সদর পর্যন্ত এলাকায় সড়কের পুরাতন পিচ উঠিয়ে নতুন করে ইট,বালু ফেলে দীর্ঘদিন ধরে অসমাপ্ত কাজ ফেলে রাখায় প্রতিদিন সড়কের উল্লেখিত অংশে গাড়ি চালকরা বাধ্য হয়ে ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে থেমে থেমে সৃষ্ট হচ্ছে যানজট।
এদিকে ময়নামতি সাহেবের বাজার এলাকায় বর্তমানে দিনের বেলায় সড়কের পিচ দেওয়ার কাজ করায় সেখানেও দীর্ঘ সময় ধরে যানজট সৃষ্ট হচ্ছে। এমনিতেই সড়কটি অনেকটা সরু। তার উপর ব্যস্ততম সময়ে দিনের বেলায় কাজ করার সময় একদিকে যানবাহন আটকে রেখে অন্যদিক থেকে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করায় গত কয়েকদিন ধরে এই সড়কে চলাচলরত যানবাহন চালকদের গাড়ি চালানোয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এসময় ২০/৩০ মিনিট একদিকে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখছে সংস্কার কাজে দায়িত্বরত লোকজন। তাছাড়া ধীরগতিতে সংস্কার কাজ করায় অসমাপ্ত অংশে থাকা সড়ক থেকে বালু উড়ে সড়কে চলাচলরত যানবাহন চালক ও যাত্রীদের বায়ূ দুষনের কবলে পড়তে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থায় শ্বাসকষ্টসহ নানারোগে ভূগছে যাত্রীসহ চালকরা। কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা-সিলেট,কুমিল্লা-কোম্পানীগঞ্জ, মুরাদনগর রুটে চলাচলকারী একাধিক পরিবহনের চালকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সড়কের বেহাল অবস্থা। সংস্কার কাজ শুরুর পর দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। তারা আরো বলেন, রাতের বেলায় সংস্কার বা মেরামতের কাজ করলে জনদুর্ভোগ অনেকটা কম হতো। উল্লেখ্য দেশের অন্যতম ব্যস্ততম কুমিল্লা-সিলেট সড়ক পথে কুমিল্লাছাড়াও চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর থেকে সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, ভৈরববাজার, কিশোরগঞ্জ, ময়ময়নসিংহসহ বিভিন্ন গন্তব্যে প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারছাড়াও, মালবাহী, অসংখ্য ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লংভেহিকেল চলাচল করে।
কাজের ধীরগতি,জনদুর্ভোগ,বায়ু দুষণের বিষয়ে ঠিকাদার হাসান মিল্লাত বলেন, দেবিদ্বার ও বুড়িচংয়ের দুটি স্থানে কাজ চলছে। বায়ু দূষণ রোধে সড়কে নিয়মিত পানি দিচ্ছি। কাজের জন্য কিছুটা দুর্ভোগতো হবেই।
বিষয়টি জানতে চাইলে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড.আহাদউল্লাহ বলেন, গত বছরের শেষ দিকে কাজ শুরু হয়েছে । ২২ কোটি টাকার এই কাজটি করছে হাসান ট্যাকনো বিল্ডার্স । আগামী সেপ্টেম্বরে কাজটি সম্পন্নের মেয়াদ শেষ হবে। তবে আমরা আশা করি আগামী ৩ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। একলাইনে কাজ করার কারণে কাজের ধীরগতি। এছাড়াও প্যান্ড তৈরী করতে অনেক সময় লেগে যাওয়ায় ধীরগতিতে কাজ হচ্ছে।