কুমিল্লার দেবিদ্বারে মাদরাসা শিক্ষককে বেধড়ক পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার এক মাদরাসা শিক্ষক মাওলানা আজিজুর রহমানকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: জাহাঙ্গীর আলম সরকারের বিরুদ্ধে।

আহত ওই শিক্ষককে শুক্রবার পার্শ্ববর্তী চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।

শিক্ষক আজিজুর রহমান একই ইউনিয়নের বেতরা দাখিল মাদরাসার সহকারী মৌলভী এবং বেতরা গ্রামের মৃত বজলুর রহমানের ছেলে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ওই শিক্ষক জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে তার স্ত্রী ৪ সন্তানের জননী আমেনা আক্তার গত বৃহস্পতিবার সকালে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন।

পরে দুপুরের দিকে স্থানীয় গ্রামপুলিশ আবদুল মতিন ওই শিক্ষককে বাড়ি থেকে চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে যান। শিক্ষক আরো জানান, তিনি চেয়ারম্যানের বাড়িতে যাওয়ার সময় তার মেয়ে দাখিল শ্রেণীর ছাত্রী আরিফাতুন নুর এবং চাচাতো ভাই আবদুস ছামাদকে সাথে নিয়ে যান।

চেয়ারম্যানের বাড়িতে যাওয়ার পর তার কোনো বক্তব্য না শুনেই চেয়ারম্যান লোহা ও কাঠের একটি লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি চেয়ারম্যানের পায়ে ধরে ক্ষমাও চান তবুও রক্ষা হয়নি তার।

নিজের বাবার প্রতি এমন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়ে আরিফাও চেয়ারম্যানের পায়ে ধরে আহাজারি করেন। তবুও ক্ষান্ত হননি ওই চেয়ারম্যান। এ সময় উপস্থিত ইউপি সদস্য নুরুল ইসলামসহ অন্যান্য লোকজনও চেয়ারম্যানকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

আহত শিক্ষক জানান, চেয়ারম্যানের এলোপাতাড়ি পিটুনিতে তার পুরো শরীর এবং শরীরের নিন্মাংশ জখম হয়ে যায়। প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে শুক্রবার তার বড় ভাই একই মাদরাসার শিক্ষক ফজলুর রহমান তাকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

ফজলুর রহমান জানান, কোনো কথা না শুনে বিচারের নামে চেয়ারম্যান পিটিয়ে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে আমার ভাইয়ের পুরো শরীর জখম করেছে। চিকিৎসা শেষে এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান, ওই শিক্ষকের স্ত্রীর বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি তাকে মারধর করেছি। তার স্ত্রী থানায় মামলা করলে তিনি গ্রেফতার হতেন। এলাকার সম্মান যেত। তাই আমি এভাবে কিছু মারধর করে বিচার করেছি।

দেবিদ্বার থানার ওসি মো: জহিরুল আনোয়ার জানান, এ বিষয়ে এখনো থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো পড়ুন