কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের গবেষণায় অনিয়ম !
কুবি প্রতিনিধিঃ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক রেনেসাঁ আহমেদ সায়মার বিরুদ্ধে স্নাতকোত্তরের গবেষণা (থিসিস) নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় শিক্ষক সমিতি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে।
উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এক মানববন্ধনে শিক্ষক নেতারা এ দাবি জানান।
উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগে বাণিজ্য, আত্মীয়করণ, বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে গত ১৬ অক্টোবর থেকে তাঁর বিচার ও অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানের উপস্থাপনায় বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু তাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী ওমর সিদ্দিকীসহ শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতারা। শিক্ষকদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে শিক্ষার্থীরাও মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, ইংরেজি বিভাগে ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেনেসাঁ আহমেদ সায়মা উপাচার্যের বন্ধুর মেয়ে হওয়ায় যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে তাঁকে বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ওই প্রভাষক ভাষাতত্ত্বের শিক্ষার্থী হয়েও বেশি নম্বর পাওয়ার আশায় সাদা দল (বিএনপি-জামায়াত) সমর্থিত উপাচার্যপন্থী এক শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে সাহিত্যে গবেষণা করেছেন; যা সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। ভাষাতত্ত্বের শিক্ষার্থী হয়ে সাহিত্যে কীভাবে গবেষণা করেন এমন প্রশ্ন রেখে এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির আহ্বান জানান শিক্ষক নেতারা।
শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, রেনেসাঁ উপাচার্যের বন্ধুর মেয়ে হওয়ায় তাঁর পরীক্ষার খাতায় নম্বর বাড়িয়ে দিতে উপাচার্য অতীতে বিভিন্ন সময়ে বিভাগের শিক্ষকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করতেন। উপাচার্য বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকদের তাঁর কার্যালয়ে ডেকে এনে নম্বর বাড়িয়ে দিতে বলতেন। নম্বর বাড়িয়ে না দিলে বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের হুমকি দিতেন উপাচার্য।
গবেষণায় অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রভাষক রেনেসাঁ আহমেদ সায়মার মুঠোফোনে কয়েকবার কল হলেও তিনি ফোন তোলেননি। এমনকি তাঁর মুঠোফোনে খুদেবার্তা পাঠিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
গবেষণায় অভিযোগের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ বলেন, ‘ওই প্রভাষকের গবেষণার বিষয়ে কী সাংঘর্ষিক তা দেখা শিক্ষক সমিতির কাজ না। এটা সিলেকশন বোর্ড দেখেছে। এখানে আমার কিছু করার নেই।’
এদিকে গত ১৬ অক্টোবর বিভিন্ন দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষকরা। এর পর থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত উপাচার্য তাঁর কার্যালয়ে আসেননি।