বরুড়ার বাতাইছড়ি-আদিনা মুড়া সড়কের বেহাল অবস্থা
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার বাতাইছড়ি বাজার থেকে আদিনা মুড়া পর্যন্ত সড়কটি অত্যন্ত বেহাল হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় সড়কটি বর্তমানে যান চলাচলের অনুপযুক্ত। বরুড়া উপজেলার বাতাইছড়ি বাজারটি বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই এলাকার উৎপাদিত কচুর লতি ও বিভিন্ন কৃষি পণ্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত সহ দেশের বাহিরে রপ্তানি করা হয়। তাছাড়া বরুড়া উপজেলা অধিকাংশ মানুষ কুমিল্লা শহর থেকে উপজেলায় প্রবেশ করার জন্য সড়ক টি ব্যবহার করে থাকেন।
কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে অনেক বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে গেছে। ওইসব গর্তে প্রতিদিনই ছোট বড় দুর্ঘটনা সহ আটকে যাচ্ছে সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারি চালিত রিকশা। বাতাইছড়ি নতুন বাজার সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রিজ যেতে যেখানে ৩০ মিনিট সময় লাগতো সেখানে সড়কটি খানাখন্দ ও অসংখ্য ছোট বড় গর্ত হওয়াতে বর্তমানে সময় লাগছে এক ঘন্টা।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আদিনা মুড়া দরগানামা গ্রামের খন্দকার বাড়ির সামনে সড়কে পিচ পাথর-খোয়া উঠে ছোট বড় অনেক গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। দরগানামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনেও একই অবস্থা। দরগা নামা গ্রামের মোহন হাজীর বাড়ির সামনে প্রায় ১০০ ফুট জায়গায় বিশাল গর্তে পানি জমে আছে। এই সড়কের নতুন যান চালকেরা কোন কিছু বোঝার আগেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। সড়কটির এমন বাজে অবস্থা তৈরি হয়েছে, ওই জায়গা দিয়ে পায়ে হেঁটে যাওয়াও অনেক কষ্ট। তাছাড়া তালুকপাড়া এলাকায়ও সড়কের পিচ- পাথর-খোয়া উঠে বাজে অবস্থা তৈরি হয়েছে। বাতাইছড়ি নতুন বাজার এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের ভাঙ্গা অংশগুলোতে পানি জমে থাকে। গর্তগুলো বড় ও গভীর হওয়াতে যানবাহন চালকরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে সাইকেল ও মোটরসাইকেল চালকেরা বেশি দুর্ঘটনায় পড়ছেন। দরগা নামা গ্রামের খন্দকার বাড়ির বৃদ্ধ আলহাজ্ব আব্দুর রহিম বলেন, অনেক বছর ধরে তার বাড়ির সামনের সড়ক টি বেহাল হয়ে পড়ে আছে কেউ খবর রাখে না সংস্কারও করেনা। প্রতিদিন অগণিত মানুষ শহর থেকে এ সড়ক দিয়ে বরুড়ায় প্রবেশ ও বাহির হয়ে থাকেন। সড়কটি বেহাল হওয়ার কারণে মানুষের প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে।
সিএনজি চালক সফিক মিয়া বলেন সড়কটি খারাপ হওয়ার কারণে আমাদের প্রচুর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ভাঙ্গা জায়গাগুলোতে গাড়ি আটকিয়ে যায়। যাত্রী নামিয়ে গাড়ি ধাক্কা দিতে হয়। আগের চেয়ে সময় অনেক বেশি লাগে। আধাঘন্টার রাস্তা এক ঘন্টা লাগছে। আমাদের গাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ওই এলাকার ব্যবসায়ী মহসীন কবির বলেন, সাত আট বছর আগে রাস্তা হওয়ার পর আর সংস্তার হয়নি। ভারি গাড়ি চলাচল করতে পারছেনা, রোগীর জন্য গাড়ি আসতে চায়না। পণ্য পরিবহনে দিতে হয় বাড়তি টাকা।
বাতাইছরি নতুন বাজারের মায়ের মমতা নামের ফল দোকানদার জহিরুল ইসলাম বলেন, পণ্য পরিবহন সমস্যা হয়। খরচের পরিমান আগের চেয়ে বেড়েছে। মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। সড়কটি এখনই সংস্কার করা খুব প্রয়োজন। অসুস্থ ও গর্ভবতী রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে।
সদ্য পিআরএলে আসা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক বরুড়া আড্ডা বাজার ব্রাঞ্চের ব্যবস্থাপক মোঃ হারুনর-রশিদ জিয়া বলেন, বরুড়া উপজেলার উত্তরাঞ্চলের মানুষের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত এভাবে অবহেলায় পড়ে থাকা দুঃখজনক। স্থানীয় সরকার প্রশাসনের উচিত দ্রুত সড়কটি সংস্কার করে জনগণের দুঃখ-দুর্দশা দূর করা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বরুড়া থেকে চারবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম আবদুল হাকিম সাহেবের ছেলে বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ.এন.এম মঈনুল ইসলাম বলেন, সড়কটি এত বেহাল হয়ে পড়ে আছে তা আমার জানা ছিল না। সড়কটির সংস্কার করার জন্য যা যা করা দরকার তা করার জন্য দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।