দেবীদ্বারের ডাক্তার দম্পতি হ্যান্ড স্যানিটাইজারে আগুন লেগে দগ্ধ হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে
কুমিল্লার দেবীদ্বারের ডাক্তার দম্পতি ডা. রাজিব ভট্টাচার্য (৩৬) ও ডা. অনুসূয়া ভট্টাচার্য (৩২) অগ্নিগ্ধে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে। গত (২১ জুলাই) মঙ্গলবার দিবাগত রাত অনুমান ১টায় রাজধানীর হাতিরপুলের ভাড়া বাসায় ওই দম্পতি অগ্নিদগ্ধ হন।
গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় ভোর ৪ টায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজারে সিগারেটের আগুন থেকে অগ্নিকান্ডে দগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক দম্পতির স্বজনেরা।
অগ্নিদগ্ধ ডা. রাজিব ভট্টাচার্য (৩৬) কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বড়শালঘর ইউনিয়নের ইষ্টগ্রামের প্রবীণ শিক্ষক লক্ষণ ভট্টাচার্যের পুত্র এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)’র নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক। তার স্ত্রী ডা. অনূসূয়া ভট্টাচার্য (৩২) শ্যামলী সেন্ট্রাল মেডিকেল চক্ষু বিভাগের রেজিস্ট্রার।
রাজিবের বন্ধু ডা. সুদীপ দে বলেন, মঙ্গলবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বাসায় রাজিব একটি বড় বোতল থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ছোট বোতলে ঢালছিলেন। তখন বোতল থেকে স্যানিটাইজার পড়ে গেলে মুখের সিগারেট অথবা মশার কয়েলের আগুনের সংস্পর্শে তার শরীরে আগুন ধরে যায়। তা দেখে তার স্ত্রী ডা. অনুসূয়া সম্ভবত তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে দগ্ধ হন। তবে অন্য কোনভাবে দগ্ধের ঘটনা হয়েছে কিনা তা এখনো জানা যায়নি। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের ভাড়াটিয়ারা তাদের উদ্ধার করে রাতেই শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিটিউটে ভর্তি করেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন জানান, রাজিবের শ্বাসনালী সহ শরীরের ৮৭ শতাংশ ও তার স্ত্রী অনুসূয়ার ২০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা শঙ্কটাপন্ন। স্ত্রী ডা. অনুসূয়ার অবস্থাও গুরুতর। তিনি বলেন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার থেকে অনেক সময় আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে। তাদেরও এমনটাই হয়েছে বলে শুনেছি।
ডা. রাজীবের কাকাতো বোন তপু ভট্টচার্য বলেন, ওই বাসায় তারা স্বামী-স্ত্রী ও মেয়ে রাজশ্রী ভট্টাচার্য এবং রাজীবের বাবা অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ স্কুল শিক্ষক লক্ষণ ভট্টাচার্য থাকেন। তাদের মেয়ে রাজশ্রী ভট্টাচার্যকে ৩ সপ্তাহ আগে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ১নং বড়শালঘর ইউনিয়নের ইষ্টগ্রাম নিজ বাড়িতে দাদীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে রাজীব সবার ছোট এবং ছাত্র জীবনে রাজীব খুবই মেধাবী ছিলেন।