বুড়িচংয়ের ভরাসার বাজারে হামলা, দুই চেয়ারম্যানের পাল্টা পাল্টি অভিযোগ
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভরাসার বাজারে বৃহস্পতিবার বিকেলে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় সন্ত্রাসীরা বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাটসহ ভাংচুর করে।
বাজারের সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন জানান, জেলার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের ভরাসার বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল আনুমানিক ৫ টায় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলামের উপস্থিতিতে ৫০/৬০ টি মোটরসাইকেল যোগে একদল বহিরাগত সন্ত্রাসী বাজারে এসে উপস্থিত হয়।
এসময় তারা কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই বাজারের মফিজ ট্রেডার্স নামের একটি রড-সিমেন্টের দোকান ও ওই দোকানের দ্বিতীয় তলায় একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বুড়িচং উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিল্লাল হোসেনের ব্যক্তিগত অফিস কক্ষে হামলা চালায়।
সন্ত্রাসীরা তখন ফাঁকা ৪/৫ রাউন্ড গুলি বর্ষন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করলে দোকানীরা প্রান ভয়ে দোকান-পাট ছেড়ে বাহিওে বেড়িয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা মফিজ ট্রেডার্সে ভাংচুরসহ নগদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা লুট করে। পাশাপাশি বিল্লাল চেয়ারম্যানের তালাবদ্ধ অফিসটি ভা্গংার চেষ্টা চালায়।
ঘটনার খবর পেয়ে আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন এসে ব্যবসায়ীদের সাথে যোগ দিয়ে সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে থাকলে এক পর্যায়ে তারা পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক পিপিএম এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হামলার পরপর ব্যবসায়ীদের সাথে স্থানীয় লোকজন মিলে হামলার প্রতিবাদে বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে সন্ত্রাসী হামলার বিচার দাবী করে।
বিষয়টি জানতে চাইলে ভরাসার বাজার কমিটির সভাপতি ,সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিল্লাল হোসেন জানান, আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম নিজে উপস্থিত থেকে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী হামলার নেতৃত্ব দেন। তিনি আরো বলেন, আমার উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েই এই হামলা চালানো হয়েছে। ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসায় আমি প্রানে রক্ষা পেয়েছি। বিষয়টি আমি এমপি মহোদয়কে জানিয়েছি। আমি এব্যাপারে মামলা করার প্রস্তুতিও নিচ্ছি।
এদিকে বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি ষোলনল ইউনিয়নের ষোলনল থেকে ভরাসার বাজার পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার কাজ পাওয়ার পর থেকে বিল্লালের নেতৃত্বে লোকজন আমার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিল। চাঁদা না দেওয়ায় মাঝে মাঝে কাজে বাধাঁও দিচ্ছিল। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৫টায় আমি ঘটনা জানতে ভরাসার বাজারের মফিজ ট্রেডার্সে গেলে দোকান মালিকের ছেলে শরীফ আমাকে আপ্যায়ন করার এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা আমার উপর হামলা করে। এসময় আমার লোকজন আমাকে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে দিলে আমি শহরের বাসায় চলে আসি। পরে কি হয়েছে সেটা আমি জানিনা।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাম্মেল হক পিপিএম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে শুক্রবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত কোন পক্ষ থেকেই মামলা করতে কেউ আসেনি।