কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক ৪ লেন হচ্ছে
কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধরখার পর্যন্ত সড়কটি চার লেনে উন্নীত হচ্ছে। এ জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। ভারতের দেওয়া ঋণে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ প্রকল্পের ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার আঞ্চলিক সড়ক দৃঢ় হবে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে চট্টগ্রাম বন্দর।
জানা গেছে, ভারতের দ্বিতীয় ঋণে ৭ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। সওজের কর্মকর্তারা জানান, দেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী ভারত, ভুটান, নেপাল এবং পূর্বপ্রান্তে মিয়ানমার ও চীনের কুনমিং শহরের অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের সড়কপথ পণ্য ও যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে বিবেচিত।
প্রকল্প অনুযায়ী, উভয় পাশে পৃথক দুই লেনসহ ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক এবং সড়ক-সংলগ্ন বাজার এলাকার জন্য ৪ দশমিক ৪৭ কিলোমিটার রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ করা হবে। এরই মধ্যে এ প্রকল্পে অনুমোদিত প্রকল্পের অতিরিক্ত জনবল নির্ধারণের প্রস্তাব পাঠিয়েছে সওজ।
ভারী যান চলাচলের কারণে বর্তমানে এ সড়ক এবং এর আওতাধীন সেতুগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ কারণে অধিকাংশ সেতু এবং সড়কের অংশ পুনরায় নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ জন্য সাব রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটিস প্রকল্পের পরামর্শকের মাধ্যমে প্রকল্পটির বিশদ জরিপ, সম্ভাব্যতা যাচাই ও বিশদ নকশা করা হয়। প্রকল্পের অধীনে ১৪টি সেতু, ১টি ফ্লাইওভার, ২টি আন্ডারপাস, ৫০টি কালভার্ট ও ১২টি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি আশুগঞ্জ নদীবন্দর-আখাউড়া স্থলবন্দর চার লেন সড়ককে সংযুক্ত করবে এবং দেশের ব্যস্ততম ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দুই মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেটের সঙ্গে যুক্ত হবে মহাসড়কটি।
এ নিয়ে সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে বৈঠক হয়েছে। প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির ওই সভায় বলা হয়, সড়কের মাটির কাজ ও পূর্তকাজসহ সামগ্রিক কাজের স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণের জন্য সওজের অনুমোদিত গাইডলাইন রয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় পুনর্বাসনসহ ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ১০৪.৯৮ হেক্টর জমির অনুকূলে যে ব্যয় ধরা হয়েছে তা মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৩৪.৯৭ শতাংশ।
সভায় বলা হয়, প্রকল্পে ১৪.৫০ লাখ হেক্টর ঘনমিটার মাটির কাজের জন্য ২১৮ কোটি ১৩ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে পরামর্শক ও ঠিকাদার নিয়োগে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঋণচুক্তি সম্পাদনকালে কনসালট্যান্টের জন্য বরাদ্দ ও নিয়োগ অর্থাৎ কনসালট্যান্সি পার্টটি বাংলাদেশের অংশে রাখতে হবে। বৈদেশিক অর্থায়নে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সুপারভিশন কনসালট্যান্ট এবং ঠিকাদার একই দেশ থেকে নিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে হবে। একই সঙ্গে ডিজাইন কনসালট্যান্ট ও সুপারভিশন কনসালট্যান্ট ভিন্ন ভিন্নভাবে নিয়োগের ব্যবস্থা থাকতে হবে। অর্থাৎ একই দেশ থেকে ডিজাইন কনসালট্যান্ট নিয়োগ করা যাবে না।
সূত্রঃ আমাদের সময়